• ঢাকা
  • সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২১, ০৭:৩৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৭, ২০২১, ০৭:৩৪ পিএম

ভূমিকম্পে এক মিনিটে দুইবার কাঁপল সিলেট

ভূমিকম্পে এক মিনিটে দুইবার কাঁপল সিলেট

ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই সিলেটে ফের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

সোমবার (৭ জুন) বিকেলে দুই দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সন্ধ্যা ৬টা ২৯ ও ৬টা ৩০ মিনিটে ভূমিকম্পে দুইবার কেঁপে ওঠে সিলেট। এ সময় নগরজুড়ে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ভূমিকম্পের মাত্রা ও  উৎপত্তিস্থল তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী।

তবে ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মমিনুল ইসলাম জানান, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৮। আর ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৮৮ কিলোমিটার দূরে।

এর আগে গত ২৯ মে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টার মধ্যে সিলেটে অন্তত ৫টি ভূকম্পন অনুভূত হয়। পরদিন ৩০ মে ভোরে আবার ভূমিকম্প হয়। এর সবগুলোর কেন্দ্রস্থল ছিল সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকায়।

নজিরবিহীন এমন ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে নগর কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণসহ জনসচেতনতা বাড়াতে জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া হয় নানা উদ্যোগ। নগর কর্তৃপক্ষের আহ্বানে বৈঠক করেন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, নগর পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্টরা। পরে ১০ দিনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সকল মার্কেট বন্ধের নির্দেশ দেয় সিসিক।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় ধরনের ভূমিকম্পের আগে বা পরে এমন ছোট ছোট ভূকম্পন অনুভূত হয়। ফলে ভূমিকম্পের ‘ডেঞ্জার জোন’ হিসেবে পরিচিত সিলেটে বড় ধরনের ভূমিকম্পের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২৯ মে ভূমিকম্পের পর সিলেট সিটি করেপারেশনের পক্ষ থেকে নগরের ঝুঁকিপূর্ণ ৭টি বহুতল বিপনী বিতান ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নগরের বহুতল ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনীয় কি না তা জরিপ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানান, ২০১৬ সালে সর্বশেষ সিলেটের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর ব্যাপারে জরিপ চালানো হয়েছিল। এতে ৩২টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। গত ২৯ মের ভূমিকম্পের পর এই ভবনগুলোর মধ্যে ৭টি বাণিজ্যিক ভবন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এই প্রকৌশলী আরও জানান, সিলেটে প্রায় ৭০ হাজার হোল্ডিং আছে। এর মধ্যে সাত তলার উপরে ভবন আছে অন্তত ৪০০টি। তবে সিটি করপোরেশনের হিসেবের বাইরেও আরও অনেক বহুতল ভবন আছে। এখন আবার বহুতল ভবনগুলোর ব্যাপারে জরিপ চালানো উচিত।

নুর আজিজ বলেন, “নগরের বহুতল ভবনগুলো ভূমিকম্পসহনীয় কি না তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা দ্রুতই সে উদ্যোগ নেব। সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আমাদের পক্ষে ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়। তবে যে ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনীয় নয়, সেগুলোর সামনে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টানিয়ে দেব।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেটে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নগরীর সব ভবনকে ভূমিকম্প প্রতিরোধক করা। এজন্য নতুন ভবন নির্মাণের আগে মাটি পরীক্ষা করতে হবে। মাটির ধরনের ওপর নির্ভর করে ভবনকে একতলা বা বহুতল করতে হবে। জলাশয় ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাবে না। ভূমিকম্প প্রতিরোধী ডিজাইনে এবং মানসম্পন্ন নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে দালান তৈরি করতে হবে। আর পুরোনো দুর্বল ভবনগুলোকে সংস্কার করে শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। সম্ভব না হলে ভেঙে ফেলতে হবে। বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করে কোনো অবস্থাতেই ভবন নির্মাণ করা যাবে না।