• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১, ০৫:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৫, ২০২১, ০৫:০৪ পিএম

হাবিবার মায়ের চিকিৎসার খরচ বহন করবে বসুন্ধরা গ্রুপ

হাবিবার মায়ের চিকিৎসার খরচ বহন করবে বসুন্ধরা গ্রুপ

দৈনিক জাগরণে “কিডনি বিক্রি করে মায়ের চিকিৎসা করাতে চান হাবিবা” এ শিরোণামে গুরুত্ব সহকারে সংবাদ প্রিন্ট এডিশন ও অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার পর উম্মে হাবিবার মা লিপি বেগমের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বসুন্ধরা গ্রুপ বহন করবে বলে জানিয়েছেন রোগীর বড় মেয়ে উম্মে হাবিবা।

দৈনিক জাগরণকে ধন্যবাদ জানিয়ে উম্মে হাবিবা বলেন, পত্রিকায় প্রাকাশিত হওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ঢাকায় যাওয়ার পর রোগীর আত্মীয়-স্বজন ও রোগীর সবরকমের যাবতীয় খরচাদি বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বহন করা হবে যতদিন পর্যন্ত না রোগী সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে না যায়।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল নতুন সময় এর কুমিল্লা প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক জানান, সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের নজরে আসলে তাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে  দ্রুত রোগীকে ঢাকায় নিয়ে আসার জন্য বলেন এবং ঢাকায় আসার পর থেকে রোগী চিকিৎসার যাবতীয় ব্যায়ভার বসুন্ধরা গ্রুপ বহন করবে বলে জানিয়েছেন।

এর আগে যে সংবাদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের নজরে এ বিষয়টি:
উম্মে হাবিবা বয়স ১৯ বছর । মেধাবী ছাত্রী মাধ্যমিক পরিক্ষায় সাইন্স থেকে জিপিএ ৩.৭৫ এবং উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষায় কুমিল্লা কমার্স কলেজ থেকে জিপিএ ৪.৫ পেয়ে পাস করেন। ছোট বোন সানজিদা আক্তার ক্লাস নাইনে পড়ে ছোট ভাই এনায়েত উল্লাহ পড়ে ক্লাস ফোর এ। তাদের বাবা অন্যের কাঠের দোকানে কাঠের বার্নিশের কাজ করতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি হলেন তাদের বাবা হাতেম মিয়া। দুই বোন ও এক ভাই আর মা-বাবা নিয়ে পাঁচ জনের পরিবার তাদের। বাবার অন্যের কাঠ মিস্ত্রিও দোকানে বার্নিশের কাজ করে অনেক কষ্টে কোন বেলা খায় তো অন্য বেলা পেটে খাবার জোটে না এভাবে না খেয়ে কষ্টে দিন-যাপন করতেন পাশা পাশি বড় মেয়ে উম্মে হাবিবা বাসায় বাসায় যেয়ে টিউশনি করে সরসারের কিছুটা হলেও হাল ধরেছিলেন।

কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস বাবা হাতেম মিয়ার লাঞ্চে ইনফেকশন হওয়ার কারণে তিনি আর কর্মক্ষেত্রে যেতে পারছেন না এখন ডাক্তারের পরামর্শে এন্টিবায়েটিক খাচ্ছেন বাবা সুস্থ্য হওয়ার আশা থাকলেও মা লিপি বেগমের ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়ায় তিনি চোখে অন্ধকার দেখছেন কিভাবে কি করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না।। মহামারি করোনার কারণে বড় মেয়ে যে কটা টিউশনি করতেন তা ও বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অসুস্থ বাবা ও ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের সেবা-যত্ন করেন। কোনদিন একবেলা খেলে সারাদিন আর খেতে পারেন না। আবার এমনও দিন কাটে তাদের যে বন ও পাউরুটি খেয়ে পেটের ক্ষুদা নিবারণ করেন। উম্মে হাবিবার বিবর্ণ মুখে এখন কেবলই  দিশেহারা ১৯ বছর বয়সী এই মেধাবী মেয়েটির চোখে। বুধবার সকালে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় উম্মে হাবিবার ।

তার চোখে-মুখে শুধু হতাশার ছাপ কথা বলার এক পর্যায়ে তার কন্ঠ আড়ষ্ট হয়ে যায় চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় ছোট ভাই-বোনের দুবেলা খাবার আর মায়ের চিকিৎসার অর্থ যোগাতে তিনি ঘুরছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজের কিডনি বিক্রি করে করবেন এবং সে টাকা দিয়ে মায়ের চিকিৎসা করবেন। এমনটিই জানালেন উম্মে হাবিবা।

উম্মে হাবিবার বাড়ি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বারপাড়ায়। তবে সেখানে তাদের মাথা ঠাঁইয়ের জায়গা না থাকায় কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতাল সংলগ্ন জিলানী মাস্টার বাড়িতে ৩ হাজার টাকায় ভাড়া থাকেন তারা।

উম্মে হাবিবা বললেন, ‘গত দুই মাস আগে মায়ের ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসার জন্য হাতে কোনো টাকা নেই। করোনায় বাবাও অসুস্থ্য ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়িভাড়া জমেছে চার মাসের। বাড়িওয়ালা চাপ দিচ্ছে ভাড়ার জন্য, নয়তো বাসা ছেড়ে দিতে। মায়ের ওষুধ কেনার টাকা নেই, নেই দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা। লকডাউনে সব ইনকামের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে আমি নিজের একটি কিডনি বিক্রি করতে চাই। কিশোরগঞ্জের এক লোকের সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি ঈদের পরে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।’

কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানতে চাইললে তিনি বলেন, ‘একদিকে চিকিৎসার অভাবে মায়ের মৃত্যু হচ্ছে, অন্যদিকে ছোট ভাই-বোনের অনাহারে থাকা সহ্য করতে পারছি না। তাই কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলাম।’ উম্মে হাবিবা তার মায়ের চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন। সহযোগিতা পাঠানোর জন্য বিকাশ ও নগদ নম্বর ০১৭৮৭২৫৯৩১৫।