• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১, ০২:৩৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৯, ২০২১, ০২:৩৪ পিএম

ড্রেনেজ সংকটে জলাবদ্ধতা, বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক 

ড্রেনেজ সংকটে জলাবদ্ধতা, বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক 

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের উপরে বোকা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত জেলার বৃহত্তম জাউয়া বাজার। ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্যতা আর প্রসিদ্ধতা থাকায় জেলার মানুষের দৈনন্দিন নিত্য প্রয়েজনীয় সাংসারিক, ব্যবসায়ীক পণ্য কেনা বেচার চাহিদা পূরণের অন্যতম ভরসাস্থল এই বাজার। ফলে প্রতিদিনই ক্রেতা বিক্রতার সমাগম ঘটে নজর কাড়ার মত।

জানা যায়, সরকার প্রতি বছর জাউয়া বাজার ইজারা দিয়ে দেড় কোটি টাকা নিলেও বাজার অব্যবস্থাপনা, ড্রেনিজ সংকট, বাথরুম অপরিচ্ছন্নতাসহ নানান জটিলতায় ভুগছে। ফলে বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতা- বিক্রেতাসহ ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

সরজমিন দেখা যায়, বাজারের গরুর হাটে জমে আছে ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পনি। চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। ড্রেইনে পানি জমে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেখানে ডেঙ্গু মশাসহ পোকামাকড়ের বসবাসস্থল হয়ে উঠেছে। জনমনে আতংক রয়েছে বাজারের এসব ময়লা, আবর্জনা ও জলাবদ্ধতা থেকে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার।  একটু বৃষ্টি হলেই ড্রেনিজ সিস্টেম ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বাজারের প্রতিটি গলিতে পানি জমে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বাজারে আসা ক্রেতা বিক্রেতাসহ ব্যবসায়ীদের।

আব্দুল আলিম জানান, আমি অস্থায়ী সবজি ব্যবসায়ী। প্রতি বাজারবারে এখানে আসি পণ্য বিক্রি করতে। কিন্তু যেখানে বসি সেখানে অপরিষ্কার থাকার কারণে ভয় হয় কখন যেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যাই কিনা।সমির আলী নামে গরু ব্যবসায়ী জানান, গরু বিক্রি করতে প্রতি বাজারবারে এখানে আসি। কিন্তু এসব দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানির উপর দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তখন ভয় হয় ডেঙ্গু মশা কামড় দেয় কিনা।

সূত্র জানায়, বাজার প্রতি বছর যে পরিমাণ টাকায় ইজারা দেয়া হয় তা থেকে ১৫ শতাংশ বাজার সংস্কারের জন্য এবং ২ শতাংশ পরিচ্ছন্নতার ব্যায়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। বাজারের ইজারা থেকে সংস্কারের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা বাজার উন্নয়নের জন্য খরচ করা হলেও বিগত তিন বছরের ইজারা থেকে বরাদ্দকৃত টাকা বাজারের কোনো সংস্কারে ব্যবহার হচ্ছে না।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দেড় কোটি টাকায় বাজার ইজারার যে পরিমাণ টাকা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ রয়েছে তা বাজারের উন্নয়নের স্বার্থে খরচ করা হচ্ছে না। যার ফলে বাজার অব্যাবস্থাপনা, পরিচ্ছন্নতা সংকটসহ নানান দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

জাউয়াবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আছাদুর রহমান জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংকট থাকায় বৃষ্টি হলে বাজারের প্রতিটি গলিতে পানি জমে যায়। যার ফলে ময়লা পানিতে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হলে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করা অসহ্য হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া আবর্জনা ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় সেখান থেকে ডেঙ্গু মশার জন্ম হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্রেতারাও চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে বাজারে অনেক উন্নয়নের প্রয়োজন। বাজারের ভিতরে ২টি বাথরুম থাকলেও একটি ব্যবহারের অনুপোযোগী আর আরেকটি পানি সংকট থাকায় ব্যবসায়ী, কর্মচারিদের জন্য গোসল করাসহ বিভিন্ন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জাউয়া বাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জানায়, ইজারা থেকে বাজারের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা থেকে বাজারের ভিতরে ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বয়ে একটি আধুনিক বাথরুম নির্মাণসহ কিছু কাজ করা হয়েছে। নির্মাণকরা বাথরুমে যদি পানি সংকট থাকে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

ইজারাদার শাহীন তালুকদার বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করি বাজার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার। এর লক্ষ্যে আমরা আগামী সাপ্তাহ খানেকের মধ্যে বালু ও মাটি ফেলে জলাবদ্ধতা সমস্য নিরসন ও ড্রেনের ভিতরে পানি নিষ্কাশসের সমস্য সমাধান করবো।

ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, বর্তমানে ডেঙ্গুর বিস্তার ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরিষ্কার ও জলবদ্ধতার কারণে যেন ডেঙ্গু না ছড়ায় সেদিকে খেয়াল রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জাগরণ/এমআর