• ঢাকা
  • রবিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২১, ১১:৩২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৯, ২০২১, ১১:৩২ এএম

সাগরের মোহনায় নিষিদ্ধ জালে অবাধে মাছ শিকার

সাগরের মোহনায় নিষিদ্ধ জালে অবাধে মাছ শিকার

পাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা 
বরগুনার পাথরঘাটার বলেশ্বর, বিষখালী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও তার তীরবর্তী চর গুলোতে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে কিছু অসাধু জেলে। এতে প্রতিদিন ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির লাখ লাখ সামুদ্রিক মাছ ও পোনা মারা পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা চরের বিরাট অংশ জুড়ে খুঁটি পুঁতে গড়া জাল বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও হরিণঘাটা- লালদিয়া বনের কোল ঘেঁষে চরাঞ্চল, বলেশ্বর তীরবর্তী পদ্মা, রুহিতা, ছোট টেংরা ও চরদুয়ানী এলাকায় জেলেরা ছোট ফাঁসের নিষিদ্ধ বেহুন্দী জাল, গড়া জাল, বাঁধা জাল, ঘোপ দিয়ে ছোট মাছ ধরছেন। এসব জালের ফাঁস আধা ইঞ্চি থেকে পৌনে এক ইঞ্চি। ঘোপ বা চরগড়া তৈরিতে শতাধিক গেওয়া ও কেওড়া গাছের খুঁটি ব্যবহার করা হয়। এইসব গাছ সিংহভাগই প্রাকৃতিক বন হরিণঘাটা, লালদিয়া ও চরলাঠিমারা সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কেটে আনা হয়। কম বয়সী লাঠি আকৃতির গাছ খুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নতুন জন্ম নেয়া গাছ কাটার ফলে সংরক্ষিত বনও উজাড়ের হুমকিতে রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, তারা বন বিভাগের সাথে রফা-দফা করেই জাল পাতেন। গোপের খুঁটি হরিণঘাটা, লালদিয়াসহ চরের বিভিন্ন জঙ্গল থেকে কেটে নেন। তারা আরো বলেন, আমরা ভাটির সময় চরে জাল পাতি, এতে পোয়া, টেংরা, গুলিশা, চাবলি (ইলিশের পোনা) সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে। জালে এসব মাছের পাশাপাশি অনেক মাছের পোনাও ধরা পড়ে। কিন্তু এসব পোনা কোনো কাজে লাগে না বলে তারা ফেলে দেন। 

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, কিছু অসাধু জেলেরা  বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও তার আসে-পাশে গোপ জালসহ নিষিদ্ধ জাল দিয়ে দখল করে রেখেছে। এ অবৈধ জাল নিয়ে আমরা একাধিকবার মানববন্ধন করেছি। বিক্ষোভ মিছিল করেছি, প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। তারপরেও সমাধান হয়নি। শুধু আশ্বাস পেয়েছি নিষিদ্ধ জাল অপসারনের, তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে নিয়মিত যে ভাবে ছোট মাছ ও মাছের পোনা শিকার করা হচ্ছে তাতে মৎস্য সম্পদ হুমকির মুখে পড়বে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ুন্ত কুমার অপু বলেন, নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান করে থাকি। কিছু দিন আগেও অভিযান করে অনেক জাল উদ্ধার করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। জেলেরা জাল পেতে চলে যায় যে কারণে  অভিযানের সময় তাদেরকে আটক করা যায়না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন আল-মুজাহিদ বলেন, শিগগিরই বঙ্গোপসাগরে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ড সমন্বয় করে অভিযান চালানো হবে। বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় নদ-নদীতে যে কোনো মূল্যে অবৈধজাল মুক্ত করা হবে। 

জাগরণ/এমআর