• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২১, ০২:২৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৩০, ২০২১, ০২:২৩ পিএম

স্বাবলম্বী হতে স্বপ্ন দেখাচ্ছে কোয়েল পাখি 

স্বাবলম্বী হতে স্বপ্ন দেখাচ্ছে কোয়েল পাখি 

কম খরচ, কম ঝুঁকি নিয়ে অধিক লাভবান হওয়ায় নরসিংদীতে দিন দিন বাড়ছে কোয়েল পাখির কামার। ফলে দেশে একদিকে ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণ হচ্ছে অপরদিকে বেকারত্ব দূর হচ্ছে। আর প্রাণী সম্পদ বিভাগ মনে করছেন এটা নরসিংদীর ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো। 

সাম্প্রতি কয়েকটি কোয়েল পাখির খামার ঘুরে খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণে হাঁস-মুরগী পালনের পাশাপাশি সম্প্রতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কোয়েল পাখি পালনের। স্বল্প পুঁজি আর কম ঝুঁকিতে বেশী লাভবান হওয়ার ফলে নরসিংদীতে দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে কোয়েল পালন। খামারী ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্যমতে নরসিংদীতে ছোট বড় প্রায় শতাধিক কোয়েল পাখির খামার রয়েছে। এই খামার থেকে নরসিংদীর চাহিদা মিটিয়ে পাখি ও ডিম সরবরাহ হচ্ছে সারাদশে। তবে এর বড় একটি বাজার রয়েছে সিলেটে। 

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গয়েশপুর এলাকার আব্দুল মজিদ মিয়া বিদেশে সুবিধা করতে না পেরে দেশে এসে শুরু করেন কোয়েল পালন। মাত্র ১২ বছরের ব্যবধানে তার এখন নিজস্ব খামার রয়েছে ৫টি। তিনি এখন বাচ্চা থেকে শুরু করে সব বয়সের পাখি ও ডিম বিক্রি করে প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় লক্ষাধিক টাকা। তার কাছ থেকে পাখি নিয়ে সফলতা পেয়েছেন মেহেদী, ইসমাইল, সাইফুল ও আলতাব হোসেন সহ আরো অনেকে। 
 
পলাশে গয়েশপুর এলাকার কোয়ল খামারির উদ্যোক্তা আব্দুল মজিদ মিয়া জানান, সংসারের স্বচ্ছলতার আশায় মালশিয়া পাড়ি জমান, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেখানে সুবিধা করতে না পেরে দেশে চলে আসেন। তিনি দেখে শোনে কোয়েল পালন শুরু করেন। প্রথমে ১৫শ বাচ্চা দিয়ে কোয়েল পালন শুরু করেন। লাভবান হওয়ায় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের কোয়েল পালনে উৎসাহিত করার ফলে অনেকেই এখন কোয়েল পালন করছেন। আর এই কোয়েল পাখি পালন করে অনেকেই এখন লাভের মুখ দেখছেন।
    
এই আব্দুল মজিদ মিয়ার কাছ থেকে কোয়েল পাখির বাচ্চা নিয়ে কোয়েল খামার গড়ে তোলার উদ্যোক্তা প্রতিবেশী ইসমাইল হোসেন, মেহেদী হাসান ও আলতাব হোসেনের দাবি অনেকে বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন আবার করোনায় অনেকের বেসরকারী চাকরি চলে গেছে। অপরদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঘরে বসে না থেকে কোয়েল পালন শুরু করেন অনেকেই। এই পাখি পালন করে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক লাভবান হওয়া যায়। কেননা এই পাখি পালন করতে গেলে অর্থ বেশী খরচ হয়না। জায়গাও কম লাগে। আর রোগও তেমন হয়না। বাজারেও এর বেশ চাহিদা থাকায় বাজারজাত নিয়ে তেমন সমস্যা হয় না।

নরসিংদী সদর উপজেলার প্রাণীসম্পদ কর্মকতা ডা. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম জানান, সারা বাংলাদেশের জন্য নরসিংদী কোয়েল পাখির জন্য একটি রোল মডেল। যারফলে নরসিংদী থেকে নিরাপদ কোয়েল পাখি দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে চলে যাচ্ছে। ফলে দেশের প্রাণীজ আমিষের ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখছে ।অল্প পুঁজি, কম ঝুঁকি, কম সময় এবং খুব অল্পস্থানেই এই পাখি পালন করা যায়। যারফলে বর্তমান সময়ে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বেকার যুবক ও যুব মহিলাগণ। সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে এই খাতটি অর্থনৈতিকভাবে আরো জুড়ালো ভূমিকা রাখতে পারে বলে খামারিদের আশা। 

জাগরণ/এমআর