• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১, ০১:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৩১, ২০২১, ০১:৩১ পিএম

প্রতিমা তৈরিতে নেই আমেজ

প্রতিমা তৈরিতে নেই আমেজ

পীর জুবায়ের, সুনামগঞ্জ

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ঘরে ঘরে দেবীদুর্গার আগমনী বার্তা নিয়ে কিছুদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী ১১ অক্টোবর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার জন্য প্রতিমা তৈরি করতে জেলা শহরের ও সব উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল মৃৎশিল্পীদের।

কিন্তু অন্য বছর এ সময়ে দুর্গাপূজার বায়না আসতে শুরু করলেও এবার তার খবর নেই। ফলে নেই প্রতিমা গড়ার ব্যস্ততা।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের রামকৃঞ্চ আশ্রমে কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে দেবীদুর্গার প্রতিমা তৈরি করছেন কারিগররা।

প্রতিমা তৈরীর কাজ চললেও জেলা শহরের কালি মন্দির, দূর্গা বাড়ি মন্দির, নতুন পাড়ার সব মন্দিরগুলোতে এখনও নেই প্রতিমা তৈরীর কোনো আমেজ।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন পূজার আয়োজন হয় বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে। সে হিসেবে মৃৎশিল্পীরাও তাদের কাজের হিসাব করেন বাংলা বছর অনুযায়ী।

অন্যান্য বছর এই সময়ে ব্যস্ত থাকলেও তারা এখন অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছেন। এমন সময়ে ভাড়া করে করিগর আনতে হয়, অথচ এবার মন্দির গুলো ফাঁকা।

রামকৃঞ্চ আশ্রমে প্রতিমা তৈরী করতে আসা মৃৎশিল্পী প্রফুল্ল পাল জানান, করোনাভাইরাস মহামারী তাদের সব ব্যস্ততা থামিয়ে দিয়েছে। আয়-রোজগার বন্ধ হওয়ায় ভবিষ্যৎ নিয়েও তারা শঙ্কায় তারা। এসময় তিনি আরও বলেন ' প্রতি বছর এ সময় ১০-১৫টি পূজামণ্ডপে কাজ করে থাকি; এ বছর মাত্র ৪টি পূজামণ্ডপের কাজ করছি।

রকেশ চন্দ্র পাল নামে আরেক মৃৎশিল্পী বলেন দুর্গাপূজার কাজ দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপার। অনেকেই তিন থেকে পাঁচ মাস ধরেও কাজ করে। তবে এবার আমরা উভয় সংকটে আছি। যে সংকট চলছে তাতে পূজার দিনক্ষনও বেশী বাকি নয়। কিন্তু এখনও তেমন কোনো মন্ডপ থেকে যোগাযোগ করছে না। উপস্থিত সময়ে যোগাযোগ করলে বুঝতে পারছি না আমরা কি করে সামাল দিব। তখন আমরা প্রতিমার কাজ নিয়ে আয়োজকদের বুঝিয়ে দিতে পারব না।

মহামারী করোনার কারণে গত বছর দুর্গাপূজার আনন্দ অনেকটা ম্লান হয়ে যাওয়ায় এবারও সন্দিহানে আছেন পূজা উৎযাপন কমিটি কর্তৃপক্ষ। ফলে অনেকই মনে করছেন গত বছরের মতো এবার পূজার সেই পুরনো সংস্কৃতি অনেকটা লুকিয়ে থাকবে অগোচরে।
সংশ্লীষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর সারা জেলায় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ৪১১টি পূজা মন্ডপে। এবং পৌরসভার ভিতরে ২৩টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। করোনা মহামারির কারনে এখনও কোনো পরিস্থিতিতি বুঝা যাচ্ছে না সেজন্য অনেক পূজা মন্ডপ ও মন্দিরে প্রতিমা তৈরী নিয়ে নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বলে সংশ্লীষ্ট সূত্র জানায়।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমল বণিক জানান, করোনা মহামারির জন্য অনেক মন্দিরে এবং পূজা মন্ডপ সন্দিহানে রয়েছে পূজা হবে কি না। সেজন্য প্রতিমা তৈরীর আমেজ দেখা যাচ্ছে না। তবে পূজার সময় আরও অনেক দিন আছে। শেষ সময়ে হয় তো সকলের আমেজ বাড়বে।

এসময় তিনি আরও জানান, গত বছর করোনা মহামারির জন্য আমরা পূজায় কোনো আয়োজন করতে পারিনি। এবার যখন সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে আশা করা যায় আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মত আয়োজন করার জন্য প্রশাসন থেকে অনুমতি পাবো।