• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ০৪:৪১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ০৪:৪১ পিএম

একটি সেতুর অপেক্ষায় ১০ গ্রামের মানুষ

একটি সেতুর অপেক্ষায় ১০ গ্রামের মানুষ

মৌলভীবাজার শহরের কোল ঘেঁষে প্রবাহিত হয়েছে স্রোতস্বিনী মনু নদী। এ নদীর একপাড়ে শহর অন্যপাড়ে গ্রাম। গ্রাম শহরের দুরত্ব তৈরি করেছে এই নদী। দশটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ শহরকেন্দ্রিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে হচ্ছেন বঞ্চিত। একটি সেতুর জন্য তারা আছেন দীর্ঘ অপেক্ষায়।

বর্ষার সময় উত্তাল নদী পাড়ি দিতে হয় নৌকায়। শুষ্ক মৌসুমে ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই ভোগান্তি নিরসনে শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য দশটি গ্রামের মানুষ চায় একটি সেতু। সেতুটি নির্মাণের জন্য ওই পাড়ের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন।

বিভিন্ন দপ্তরে একটার পর একটা আবেদন করেছেন। শহরেও মানববন্ধন হয়েছে কয়েকবার। তাদের এ দাবির প্রেক্ষিতে পরিকল্পনামন্ত্রী, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য সেতুর দাবিকৃত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন সবকিছু পর্যালোচনা করে সেতুর বিষয় বিবেচনা করা হবে।

জেলা সদরের চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের সাবিয়া, বলিয়ারভাগ, গুজারাই, বালিকান্দি, ঢেউপাশা, মমরুজপুর, আটাশপাইকা, মাহতাবপুর, নুরপুর, আশিয়াসহ ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা পার্থসারথী কর বলেন, আমাদের সমস্যা বিভিন্ন দফতরে উপস্থাপন করেছি। কয়েকদিন আগে পরিকল্পনামন্ত্রী এসে পরিদর্শন করে গেছেন এবং আশ্বাস প্রদান করেছেন এ বিষয়টি তিনি দেখবেন। তবে এখনো দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না হওয়ায় আমরা হতাশ। আমরা চাই দৃশ্যমান পদক্ষেপ ও দ্রুত সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা করা।

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা এখলাছুর রহমান জানান, শীত মৌসুমে নদীর পানি কম থাকে, এসময় পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকো দেওয়া হয়। এই বাঁশের উপর দিয়ে সকল বয়সী মানুষ এপার ওপার হন। তবে বর্ষায় নদীটি যখন পানিতে টইটম্বুর থাকে তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় পারাপার করতে হয়। অতীতে অনেকবার খেয়া নৌকা ডুবেছে।

দীর্ঘদিন থেকে সেতুর দাবি করে আসা বাবুল দেব বলেন, একটি সেতুর অভাবে ১০ গ্রামের মানুষদের অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখানে সেতু নির্মাণ করা হলে গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীসহ, অফিস-আদালতে যাতায়াত হবে নিরাপদ। মা ও শিশু, বয়স্ক মানুষ রাতের বেলা চিকিৎসা সেবার জন্য দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে পারবে। কম সময়ে, কম টাকা খরচে গ্রামের মানুষ শহরে আসতে পারবে, সহজেই পাবেন শহরের সুযোগ-সুবিধা।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পৌরমেয়র মোঃ ফজলুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীগণ মনুনদী পরিদর্শন করেছেন এবং জনগণের চাহিদার প্রেক্ষিতে সেতু নির্মাণের কথা বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন থেকেই এলাকার মানুষ দাবি জানাচ্ছেন, তাদের দাবি যৌক্তিক।

মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জিয়া উদ্দিন জানান, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মহোদয় পরিদর্শন করে গেছেন। সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা অবগত হয়েছেন। আমাদের জানিয়েছেন সেতু নির্মাণের বাস্তবতা, মানুষের সুযোগ-সুবিধা এবং কারিগরি টিম নিয়ে জরিপ করার জন্য। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, সবকিছু যাচাই ও পরীক্ষা নিরিক্ষা চলছে।