• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২১, ০৩:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২, ২০২১, ০৩:৪৯ পিএম

১৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

গাইবান্ধায় ২১ কোটি ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ

গাইবান্ধায় ২১ কোটি ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ

মাসুম লুমেন, গাইবান্ধা

ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে সরকারি পাঁচ হাজার ৮ শত ২৩ মেট্রিকটন সরকারি চাল জালিয়াতির মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

গত ২৬ আগস্ট রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. হোসাইন শরীফ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) দুদক সদর দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, ১৬ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের আসামি করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজসে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় জিআরের বরাদ্দকৃত (ধর্মীয় সভার অনুকূলে) পাঁচ হাজার ৮ শত ২৩ মেট্রিকটন সরকারি চাল ভুয়া কাগজ দাখিলের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। পরে তা কালোবাজারে বিক্রি করেন। এ চালের সরকারি মূল্যমান হিসাবে ২২ কোটি তিন লাখ ২১ হাজার ৫৯০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের দণ্ডবিধির ৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম, ১ নং কামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশাহেদ হোসেন চৌধুরী,২ নং কাটাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম (রফিক), ৩ নং শাখাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তাহাজুল ইসলাম, ৪ নং রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল লতিফ সরকার,৫ নং সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাকিল আলম, ৬ নং দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. র. ম. শরিফুল ইসলাম জজ ৭ নং তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতিকুর রহমান আতিক, ৮ নং নাকাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের প্রধান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আকতারা বেগম, ১০ নং রাখালবুরুজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহদাত হোসেন, ১১ নং ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান মোল্লা, ১২ নং গুমানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শরীফ মোস্তফা জগলুল রশিদ রিপন, ১৩ নং কামারদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শরিফুল ইসলাম রতন, ১৪ নং কোচাশহর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন, ১৫ নং শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মন্ডল, ১৬ নং মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল লতিফ প্রধান, ১৭ নং শালমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমির হোসেন শামীম ও গোবিন্দগঞ্জ কাউন্সিলর মো. গোলাপী বেগম।
এবিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জানান, তদন্তের বিষয়টি জানি। কিন্তু মামলার বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। মামলার কাগজ দেখে বিস্তারিত জানা যাবে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন জহিরুল ইসলাম। বিগত ৬ বছর হলো তিনি দায়িত্বে থাকা কালিন সময়ে গোবিন্দগঞ্জে উপজেলায় ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। এসময়ে উপজেলার টি আর, কাবিখা, কাবিটা ও দূর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণসহ আশ্রয়ণ প্রকল্প গুলোতে দৃশ্যমান অনিয়ম দূর্নীতি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ বলে মনে করেন গোবিন্দগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজ।