• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ১১:২৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ১১:২৭ এএম

বেহাল সেন্টমার্টিন জেটি, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

বেহাল সেন্টমার্টিন জেটি, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের জেটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যেকোন মুর্হুত্বে ওই জেটিতে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।সম্প্রতি ঘূর্ণীঝড় ইয়াসের কারণে টেকনাফের সেন্টমার্টিনের একমাত্র জেটিটি ভেঙে গেছে।

এদিকে কক্সবজারের অন্যতম আকর্ষণীয় এলাকা হলো টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এই সেন্টমাটিন দেখার জন্য পর্যটন মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক আসে কক্সবাজারে। তারা প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ঘুরতে যায় পরিবার পরিজন নিয়ে। কিন্তু এদিকে কক্সবাজারের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন জেটির বেহাল অবস্থা। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।  

বর্তমান যে অবস্থায় রয়েছে তা দিয়ে স্থানীয়রা পর্যন্ত যেতে পারছে না। তারা সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে আসতে চাইলে বেশ বেগ পোহাতে হয়। এদিকে সব ঠিকটাক থাকলে প্রতিবছরের ন্যয় নভেম্বর মাসেই শুরু হতে পারে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল। পর্যটন মৌসুম শুরু হলেই এই জেটি ঘাট নিয়ে একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা সবার মাঝে থেকেই যাচ্ছে। জেটি তত্ত্ববধানে আছে কক্সবাজার জেলা পরিষদ। জেটির কোন ধরেনে উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে জানান স্থানীয়রা। 
তারা আরো বলেছেন, প্রতিবছর ইজারা দিয়ে কোটি টাকা নিয়ে গেলেও এই জেটির কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। যদি এভাবে রাখা হয় তবে এই মৌসুমে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
 
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর সাবেক সভাপতি তোফায়েল আহমেদ জানান, এই বর্ষা মৌসুমে ঘূর্ণীঝড়ের কারণে এখন পুরোপুরি ভেঙে গেছে জেটিটি। যদি এটি নতুনভাবে মেরামত করা না হয় তাবে পর্যটনখাতে বয়ে আনবে আরেকটি কালো মেঘের সন্ধ্যা। আমি আশা করছি জেলা পরিষদ ককসবাজার এই সেন্টমার্টিন ঘাট মেরামত বা নতুন নির্মাণ করে পর্যটকদের নিরাপদ যাতায়াত সুনিশ্চিত করবে। 

সূত্র মতে, ২০০৪ সালে সিএমএম কনসোর্টিয়াম মালিকের ঠিকাদারিতে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এই সেন্টমার্টিন জেটি। দীর্ঘদিন ধরে জেটির রেলিং পূর্ব পাশের পার্কিং ও গাইড বিম, স্পিং বিম সাগরের বুকে চলে যায়। জেটির নিচে বেশির ভাগই ভেঙে রডগুলো দেখা যাচ্ছে। ফলে যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এই বছরে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণীঝড়ের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে জেটিরও ভয়াবহ ভাঙন ও ফাটল তীব্র আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল মালেক জানান, ২০০৫ সালে ১৫ জুন এই জেটি দিয়ে পর্যটকসহ স্থানীয়দের চলাচল শুরু হয়। এই জেটিটি নির্মাণের পর থেকে বেশ কয়েক বছর ভালোভাবে চললেও ১০-১২ বছর ধরে জেটির সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়। 

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান জানান, যখন পর্যটন মৌসুম আসে তখন জেলা পরিষদ থেকে কাঠ দিয়ে অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়। কিন্তু এই বছর প্রেক্ষপট ভিন্ন জেটির অবস্থা বেশ নাজুক। ঘুর্ণীঝড় ইয়াস সব শেষ করে দিয়েছে। আসছে মৌসুমে যদি ঠিক করা না হয় তবে পর্যটক  আসতে পারেবে না। 

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমদ জানান, ঝুঁকিপূর্ণ জেটির কারণে সেন্টমার্টিন থেকে পর্যটক বিমুখ হয়ে যাবে। বিপর্যয় এড়াতে প্রাথমিকভাবে রেলিংগুলো হলেও মেরামতের ব্যবস্থা করা দরকার। এমন অবস্থায় দ্বীপের একমাত্র জেটিটি সংস্কার করা না হলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে সরকার পর্যটকদের রাত্রীযাপনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা শুনে স্থানীয়রা নিরাশ হয়ে পড়েছে। 

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী হিল্লোল বিশ্বাস জানান, এই জেটি নিয়ে অস্থিরতার মধ্যে আছি। ভাঙা জেটি নিয়ে জেলা পরিষদের কি পরিকল্পনা আছে তা জানতে চাইলে উল্টো প্রতিবেদককে উল্টো প্রশ্ন করে বসে কি কিসের পরিকল্পনার কথা জানতে চাইছেন? তিনি আরো বলেন, আমি অনেক সমস্যায় আছি জবাব দিতে দিতে অস্থির হয়ে আছি আর ভাল লাগছে না। আমরা দুটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি একটি মেরামত করার, আরেকটি নতুন জেটির জন্য প্রস্তাব করেছি। যেটির অনুমোদন হয়ে আসে আমরা সেভাবে কাজ করব।

জাগরণ/এমআর