• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১, ০২:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১, ০২:০২ পিএম

মাছ চাষে কোটিপতি 

মাছ চাষে কোটিপতি 

মানুষের কত রকম শখ আছে। কারো কৃষি কাজ, কারো পাখি পালন করতে ভালো লাগে, কারোর ফুল চাষ করতে ভালো লাগে, আবার কারো অ্যাকুরিয়ামে রঙিন মাছ চাষ করতে ভাল লাগে। কিন্তু কখনও কখনও এই সৌখিন বিষয়টি হয়ে ওঠে জীবন সংসারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক। এমন একজন সৌখিন মানুষ রয়েছে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ব্রজবাকসা গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের বড় ছেলে সাইফুল্লাহ গাজি। তিনি রঙিন মাছ চাষ করে পাল্টে নিয়েছে তার জীবন-জীবিকা। অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি তাকে দেশব্যাপী পরিচিতিও এনে দিয়েছে। এখন তাকে সবাই এক নামে চেনেন ‘রঙিন মাছের কারিগর’ হিসেবে।

তার হ্যাচারির পানিতে ভাসছে নানা রঙের মাছ। লাল, নীল, কমলা, কালো, বাদামি, হলুদ রঙের মাছের ছড়াছড়ি। গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কই, মলি, গাপটি, অ্যাঞ্জেল প্রভৃতি বর্ণিল মাছ দেখলে চোখ জুড়িয়ে, মন ভরে যায়। কলারোয়ার এই তরুণ উদ্যোক্তা সাইফুল্লাহ গাজী রঙিন মাছের চাষ তার জীবনকে রাঙিয়ে দিয়েছে। 

সাইফুল্লাহ মাত্র ৬২০ টাকায় অ্যাকুরিয়াম মাছের চাষ শুরু করেন। আর সেই মাছ চাষ তাকে আজ বানিয়েছে কোটিপতি। তিনি জমি কিনে সেখানে গড়ে তুলেছেন ব্রজবাকসা এলাকার সেরা দালান কোটা। বাড়িটি বানাতে ১ কোটির উপরে খরচা হয়েছে। এক সময় বিদেশ থেকে আমদানি করা অ্যাকুরিয়ার মাছ সৌখিন ব্যক্তিদের বাসা-বাড়িতে শোভা পেত। কিন্তু উদ্যোমী সাইফুল্লাহ’র চেষ্টায় দেশ থেকে উৎপাদিত মাছ এখন সৌখিনদের বাসা-বাড়িতে যাচ্ছে। বর্তমানে দেড় কোটি টাকার মূলধন খাটিয়ে ব্যবসা করছেন সাইফুল্লাহ গাজি। যিনি সাতক্ষীরার কলারোয়ার বজ্রবকসা গ্রামের বাসিন্দা। 

বর্তমানে ২০টি পুকুরে বিভিন্ন প্রকারের অ্যাকুরিয়ামের মাছ চাষ করছেন তিনি। বিশাল মূলধন খাটানোর পাশপাশি ৫০জন বেকারের কর্মসংস্থান করেছেন এই সাইফুল্লাহ গাজী। তার পুকুরে বাহারি রঙের মাছে সমারোহ দেখা গেছে। প্রতিদিন সকালে পাত্রে শব্দ করে মাছকে খাওয়ার দাওয়াত দেন সাইফুল্লাহ। শব্দ শুনে পুকুরের এক কিনারে জমা হয় সব রঙিন মাছ। এরপর খাবার ছিটিয়ে দিলেই নিমিষেই খাবার খেয়ে তৃপ্ত হয় মাছগুলো।

সাইফুল্লাহ গাজী বলেন, আমার চাষ করা অ্যাকুরিয়াম মাছ ঢাকার কাঁটাবন, খুলনা ও রাজশাহীসহ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশ রপ্তানি করার ইচ্ছা রয়েছে তার। এতে নিজে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশ লাভবান হবে। তবে রঙিন মাছ চাষ এখন কেবল সাতক্ষীরা অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ না। ফেনী, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুরেও বাণিজ্যিকভাবে রঙিন মাছের চাষ হচ্ছে। এছাড়া অনেকে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে বাসার ছাদেও রঙিন মাছের চাষ করে তা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করছেন। 

কলারোয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ বলেন, রঙিন মাছে চাহিদা থাকায় খামারিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। আমরাও চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

জাগরণ/এমআর