• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২২, ০৪:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৬, ২০২২, ০৪:২৪ পিএম

রোগী পছন্দ হলে যৌনতায় লিপ্ত হতেন বাঁধন

রোগী পছন্দ হলে যৌনতায় লিপ্ত হতেন বাঁধন

মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য নিরাময় কেন্দ্র খোলা হলেও সেখানে চলতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এমনকি রোগীকে পছন্দ হলে তার সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতেন নিরাময় কেন্দ্রটির মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধন।

ওই কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে থেকে হাতিয়ে নেয়া হতো লাখ লাখ টাকা। কোনো রোগী অভিভাবকদের কাছে অভিযোগ করলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হতো। র‍্যাব বলছে- কেন্দ্রটির সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন মাদকাসক্ত!
 
মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজীপুর জেলা শহরের ভুরুলিয়া কালাসিকদারের ঘাট এলাকায় ‘ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র’ নামে প্রতিষ্ঠানটিতে র‍্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

এ ঘটনায় ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এছাড়া ৪২০টি ইয়াবা উদ্ধার করে কেন্দ্রটি সিলগালা করে দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে অভিযান চালানো হয়। যেভাবে নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা ও রোগীদের সেবা দেওয়ার কথা তা সেখানে দেওয়া হতো না। এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হতো বলে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন রোগীরা।

তিনি আরো জানান, এখান থেকে শারীরিক নির্যাতনের ফুট প্রিন্ট পাওয়া গেছে। বিশেষ করে রোগীদের ঝুলিয়ে পেটানো এবং শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ হিসেবে রশি উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। একটি নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনার জন্য যে নিয়ম-কানুন আছে তার অধিকাংশই এখানে মানা হতো না। এ কেন্দ্রে নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য কোনো চিকিৎসক ছিল না। এ কেন্দ্রে যে পরিমাণ রোগী থাকার কথা তার চেয়ে বেশি রোগী ছিল।

২০০৯ সালে কেন্দ্রটি অনুমোদনহীনভাবে শুরু করলেও পরে অনুমোদন নেয়া হয়। পরে মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধন কোনো প্রকার নিয়ম-কানুন না মেনে কেন্দ্রটি পরিচালনা করতে থাকেন। এ কেন্দ্রে চিকিৎসার নামে জোরপূর্বক রোগীদের আটকে রাখা হতো। এমনও রোগী রয়েছেন যিনি ৩ বছর ধরে এখানে অবস্থান করছেন। রোগীরা কোনো প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর নির্যাতন চালাতেন মালিকের পালিত কর্মচারীরা। এ রকম ৫-৭ জন রোগী পাওয়া গেছে যাদের দেহে শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী জানান, কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীকে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের পছন্দ হলে তার সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতেন তিনি।

এক রোগীর মা জানান, তার ১৬ বছরের ছেলে ৭ মাস ধরে এ কেন্দ্রে ছিল। এ জন্য তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেয়া হয়েছে।

ওই কেন্দ্রের ২৮ জন রোগীকে মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ইউএম