• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৭:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৭:৫১ পিএম

সংযোগ না পেয়ে অকেজো ৩১ লাখ টাকার ব্রিজ

সংযোগ না পেয়ে অকেজো ৩১ লাখ টাকার ব্রিজ
তিন বছর আগে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া সিতাইঝাড় ব্রিজ।

নয়নাভিরাম রঙের ছোঁয়ায় জ্বলজ্বল করে দাঁড়িয়ে আছে সিতাইঝাড় ব্রিজ। চকচকে দেখতে ওই ব্রিজটি শুধু গ্রামের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করেনি নির্বিঘ্ন যাতায়াতের ক্ষেত্রেও চরবাসীর মনে আশা জাগিয়েছিল।  কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় অকেজো হয়ে এই ব্রিজই এখন তিন ইউনিয়নের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সিতাইঝাড় গ্রামের হাদের গোয়ালের বাড়ির পেছনে ত্রাণ ও পুর্নবাসন কেন্দ্রের অর্থায়নে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রিজ। কাজ শেষ হওয়ার আগেই বন্যার পানিতে এর দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক বিছিন্ন হয়।

সরজমিনে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা, পাঁচগাছি ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের জন্য ১৮ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজটি নির্মিত হওয়ায় তিন ইউনিয়নের মানুষের মাঝে স্বস্তি আসে। আশপাশে গড়ে উঠা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট বাজারে যাতায়াতের সুবিধা হবে বলে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রতীক্ষায় থাকেন লোকজন, কিন্তু সেই আশা আর স্বপ্নে ধস নামে ২০১৮ সালের বন্যায়। উদ্বোধন হওয়ার পানির স্রোতে ব্রিজটির দু'পাড়ের সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। ফলে জনসাধারণের চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয় উঠে। এতে সব শ্রেণীর পথচারী পড়েন চরম ভোগান্তিতে। উপায়ন্তর না পেয়ে প্রতি বছরই পানির উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় গ্রামবাসীর। ব্রিজটি নির্মাণের প্রায় তিন বছর পার হলেও এর সংযোগ সড়ক স্থাপন না হওয়ায় এখন বিপাকে এলাকাবাসী।

স্থানীয় আব্দুল লতিফ বলেন, এখান থেকে ১ কি. মি. দূরে কমিউনিটি ক্লিনিক, নয়ারহাট বাজার, মাদ্রাসা ও নয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয়। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। শুকনো মৌসুমে ব্রিজের নিচ দিয়ে,অন্যের ক্ষেত নষ্ট করে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষার সময় খুবই সমস্যা হয়। আশপাশে বিকল্প রাস্তা নেই। থাকলেও এখান থেকে তিন-চার কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। অনেক সাধনার পর ব্রিজ পেলাম, কিন্তু  এতে এখনো পর্যন্ত পা রাখতে পারলাম না- বিষয়টা খুবই আক্ষেপের।

স্থানীয় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাঈদুল ইসলাম বলেন, বন্যার সময় স্কুলে যেতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। সময়ে সময়ে বাঁশের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পা পিছলে পানিতে পড়ে যাই। জামা-কাপড় বই-খাতা ভিজে যায়। সেদিন আর স্কুলে যাওয়া হয় না। সংযোগ সড়ক হলে আমাদের আর কষ্ট হতো না।

সদরের মোগল বাসা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য (মেম্বার)  লোকমান আলী বলেন, ব্রিজটি নির্মাণ হওয়ার পরেই বন্যায় এর সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। গত তিন বছরে এর সংস্কারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অফিসে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করা হয়েছে। ওরা এসে স্টিমেট করে গেলেও আজ পর্যন্ত কোনো টেন্ডার বা কাজের কোনো অগ্রগতি দেখছি না।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ ফিজানুর রহমান বলেন, মোগল বাসা ইউনিয়নের সিতাইঝাড় ব্রিজটি বন্যার পানিতে সংযোগ সড়ক বিছিন্ন হয়েছিল। গত বছরে সংযোগ সড়ক সংস্কারের জন্য কাজ করা হয়েছিল। কাজ শেষ না হতেই আবারও বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি আমার জানা আছে। ওই ব্রিজেরর সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।