• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২, ০১:৩৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২২, ০৬:২৩ এএম

টেকনাফে নারীকর্মীসহ ৬ জনকে পেটালেন ইউপি মেম্বার

টেকনাফে নারীকর্মীসহ ৬ জনকে পেটালেন ইউপি মেম্বার

টেকনাফের হ্নীলায় ইউপি মেম্বারের হাতে মারধরের শিকার ও লাঞ্ছিত হয়েছে কোস্ট ফাউন্ডেশনের দুই নারীকর্মীসহ ৬ জন। তারা হলেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক তাহরিমা আফরোজ টুম্পা (২৬), যুগ্ম পরিচালক ফেরদৌস আরা রুমি (৪২), প্রকল্প প্রধান মো. শাহীনুর ইসলাম (৩৪), মনিটরিং অফিসার আক্তার হোসেন (৩১), ফিল্ড কো-অডিনেটর রহিম উল্লাহ (৩২), ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর মিজানুর রহমান (২৬)।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে হ্নীলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন জেলে পাড়ার মৃত কাশি মোহন দাশের বসত ভিটায় উঠান বৈঠককালে এ ঘটনা ঘটে।

৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় থানা পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলা ও লাঞ্ছনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রেজাউল করিম (৩৪) হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও নাটমুরাপাড়া মৃত আবুল কাসেমের ছেলে। 

তাকে প্রধান করে মোহাম্মদ ইসমাইল (৪৫) নামের ব্যক্তিসহ আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে রাতে টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভিকটিম নারীকর্মী প্রকল্প ব্যবস্থাপক তাহরিমা আফরোজ টুম্পা।

বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় লিখিত এজাহার পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ভিকটিম তাহরিমা আফরোজ টুম্পা বলেন, উঠান বৈঠক চলাকালে অতর্কিতভাবে এসে অহেতুক উত্তেজিত হয়ে আমাকেসহ আমার সহকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগাজ করেন মেম্বার রেজাউল করিম। সাথে আরও ৫/৬ জন লোক ছিল। তারা আমাদেরকে এক্ষুনি এলাকা ছেড়ে যেতে হুমকি-ধামকি দেয়। কিছু বুঝে উঠার আগেই অকথ্য ভাষায় গালমন্দের পাশাপাশি কিল, লাথি ঘুঁষিসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। আমার পরিহিত কাপড় ধরে টানা হেঁচড়া ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে রেজাউল করিম।
তারপর লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। 

একইভাবে অন্যান্য সহকর্মীদেরও মারধর ও লাঞ্ছিত করেন। পরিস্থিতি খুবই খারাপ হওয়ায় সহকর্মীরা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে। খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এসময় অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমিসহ আহত অন্যান্য সহকর্মীরা টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করি।

আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাই। কোস্ট ফাউন্ডেশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো হতে নিবন্ধিত। যার নাম্বার-১২৪২। 

সংস্থাটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কক্সবাজার জেলায় ২০০১ সাল থেকে সকল উপজেলার উপকূলী দরিদ্র, নারী, শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। বিশেষ করে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আগমনের পর থেকে কক্সবাজার জেলায় মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংস্থাটি। উখিয়া এবং টেকনাফে রোহিঙ্গা আগমনের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনমান উন্নয়নে কোস্ট ফাউন্ডেশন বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করে। হ্নীলা ইউনিয়নের ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ ৪৮৫ পরিবারের সাথে কাজ করছে। সমস্ত কর্মসূচি স্থানীয় প্রশাসন অবগত এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নিয়েই কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রেজাউল করিমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এনজিও কোস্ট ফাউন্ডেশনের ৬ জন কর্মকর্তার উপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

দৈনিক জাগরণ/আরকে