• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২২, ০২:৪৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২৩, ২০২২, ০২:৪৩ পিএম

লাখাইয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী হয়রানীর অভিযোগ 

লাখাইয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী হয়রানীর অভিযোগ 

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার বামৈ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মমিনুল হক নিটোলের বিরুদ্ধে এক স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। 

অভিযুক্ত শিক্ষক মমিনুল হক লাখাই থানার সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল ইসলামের পুত্র। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মমিনুল হককে বহিস্কার ও শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। 

ওই ছাত্রীর পিতা লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মঙ্গলবার (২২ মার্চ) এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শ্লীলতাহানীর শিকার ওই ছাত্রী বামৈ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষক মুমিনুল হক প্রায়ই স্কুলে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করতেন। বিভিন্ন সময় তার আচরণ দ্বারা ওই ছাত্রীকে যৌনভাবে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করতেন। এ কারণে ওই ছাত্রী মমিনুলকে এড়িয়ে চলতেন। বিষয়টি ছাত্রীর পরিবারকে জানালে পরিবার তাকে নিরবে মোকাবেলা করার পরামর্শ দেয়।

১৬ মার্চ সকাল ১০ টায় স্কুলের প্রাত্যহিক সমাবেশ ( এসেম্বলী ) শুরু হলে ওই ছাত্রী শারীরিক অসুস্থতা বোধ করায় এসেম্বলিতে না গিয়ে স্কুল ভবনের তৃতীয় তলায় তার শ্রেণীকক্ষে বসেছিলেন। এ সময় সহকারী শিক্ষক মো: মুমিনুল হক ওই ছাত্রীর কাছে গিয়ে অশ্লীল যৌন ইঙ্গিত প্রদর্শন করে তার হাতে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এবং আয়া গৌড়ী এর আগমনের সাড়া পেয়ে হাত মমিনুল হাত ছেড়ে দেন। 

মো: মুমিনুল হক তখন বলেন, সে অসুস্থ এসেম্বলিতে যাবে না। মুমিনুলের এই আচরণে ছাত্রী হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। তারা চলে যাওয়ার পর ওই ছাত্রী ছাদে চলে যান। কিছুক্ষণ পর মো: মুমিনুল হক ছাদে গিয়ে আবার ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরেন। তখন ছাত্রী তার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যে অনেক চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে চিৎকার করলে মুমিনুল হক তার মুখ চেপে ধরেন। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: আব্দুল করিম ঘটনাস্থলে এসে পড়লে মমিনুল ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দেন এবং স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ চৌধুরীকে জানানোর পরেও তিনি মুমিনুল হকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং তাকে রক্ষায় যাবতীয় চেষ্টা-তদবির চালানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। এদিকে এ ঘটনাটি লোকমুখে জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় । 

বুধবার (২৩ মার্চ) সকাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক মমিনুল হকের শাস্তির দাবিতে লাখাই- হবিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় যানবাাহণ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: শরিফ উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে তাকে বহিস্কারে আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়। 

এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরিফ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির কারণে তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। 

জাগরণ/আরকে