• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২২, ১২:৫৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১২, ২০২২, ১২:৫৯ পিএম

বিধিমালা লঙ্ঘন করে নির্মাণে নজরদারি নেই কর্তৃপক্ষের 

বিধিমালা লঙ্ঘন করে নির্মাণে নজরদারি নেই কর্তৃপক্ষের 

এরশাদ হুসাইন অন্য, সোনারগাঁ
ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় একের পর এক শিল্পকারখানাসহ, বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন গড়ে উঠেছে। এসব ভবন নির্মাণ করার ক্ষেত্রে উপজেলা কার্যালয় থেকে নকশা অনুমোদনের কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। বিধিমালা না মেনে গড়ে ওঠা কতোগুলো ভবন রয়েছে এর সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই বলেও জানান উপজেলা প্রকৌশলী।

উপজেলা সূত্রে জানা যায়, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সমূহের আওতা বহির্ভূত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ এর অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় ইমারত/স্থাপনার নকশা অনুমোদন এবং ভবনের গুনগত মান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১০ জুলাই স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সভাপতি এবং সহকারী প্রকৌশলীকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ওই কমিটিতে সদস্য করা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি), সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর প্রতিনিধি, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানারস এর প্রতিনিধি, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অব বাংলাদেশ এর প্রতিনিধিকে। 

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে, কমিটি ১৯৫২ ও ১৯৯৩ সহ ইমারত আইনের প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করবে এবং ১৯৯৬ এর বিধিমালা অমান্য করে গড়ে তোলা ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু কমিটি গত ৫বছরেও কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কাঁচপুর, মোগরাপাড়া ও পিরোজপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি বিধিমালা লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পিরোজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম (বিডিআর) নির্মাণ করেছেন ৯ম তলা আবাসিক ভবন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা ৬ তলার বেশি ভবনের অনুমোদন দিতে পারেনা, রাজউক থেকে ৯তলা ভবনের অনুমোদন নেওয়ার ব্যবস্থা করতেছি। 

মোগরাপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর, গোহাট্টা, বাড়ি মজলিশ এবং কাঁচপুরের সোনাপুর, বেহাকৈর, সেনপাড়া ও চেঙাইন এলাকায় বিধিমালা লঙ্ঘন করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। এসব ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। রয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগের অভিযোগও। সোনাপুর এলাকায় সৌদি প্রবাসি মো: ফারুক মিয়া অনুমোদন ছাড়াই দুটি ১০তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। এব্যাপারে জানতে চাইলে বাড়ির ম্যানেজার কোন কথা বলতে রাজি হননি। ওই এলাকায় আরও একাধিক ৮ ও ৯তলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আরজুরুল হক বলেন, উপজেলায় নির্মাণ হওয়া বেশির ভাগ ভবনেরই অনুমোদন নেই। এর ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এসব ভবন মালিকদের তালিকা তৈরি করে শিগগিরই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নারায়ণগঞ্জ-২ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এর উপ-সহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম বলেন, ৬তলার অধিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে নকশার অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে ঐ ভবন সম্পূর্ণ অবৈধ। 

উক্ত কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আইন অমান্য করা ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে নোটিশ দিয়ে বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিবো। 

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তৌহিদ এলাহী বলেন, ইমারত বিধিমালা অমান্য করে কেউ ভবন নির্মাণ করে থাকলে অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


জাগরণ/আরকে