• ঢাকা
  • সোমবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৩, ১২:২৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১, ২০২৩, ১২:২৬ এএম

বাংলায় স্নাতক করছেন ট্রান্সজেন্ডার হৃতিকা

বাংলায় স্নাতক করছেন ট্রান্সজেন্ডার হৃতিকা
ছবি ● সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হৃতিকা। তবে তার পুরো নাম ‘রাসেল আহমেদ হৃতিকা’।

তিনি নিজের পরিচয় দেন হৃতিকা নামে। তিনি একজন ট্রান্সজেন্ডার নারী।

কথা হয় হৃতিকার সঙ্গে। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই তাকে নানা কটু কথা শুনতে হয়েছে। অন্য ট্রান্সজেন্ডারদের মতো তাকেও শতসহস্র চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজে বাংলায় অনার্স করেছেন তিনি। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করেন তিনি।

হৃতিকা বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার দাসের জঙ্গল এলাকায়। ট্রান্সজেন্ডার হওয়ায় আমাকে পরিবার থেকে আলাদা করে রাখা হতো। কোনেও অনুষ্ঠানে যেতে দেয়া হতো না। অবজ্ঞা আর অবহেলা সহ্য করতে না পেরে আমি শরীয়তপুর সদরের গুরুমা মিলন হিজড়ার দলে যোগ দেই। পরে টাকা যুগিয়ে কলকাতায় গিয়ে অপারেশন করে ট্রান্সজেন্ডার পুরুষ থেকে ট্রান্সজেন্ডার নারী হই।’

হৃতিকা আরও বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার মধ্যে একটি অন্যরকম পরিবর্তন লক্ষ্য করি। আমার চার ভাই আমি তাদের মতো না। আমার এক বোন আছে তার মতোও না। যখন বড় হতে থাকি তখন একপর্যায়ে নিজেকে মেয়েদের মতো অনুভব করি। ট্রান্সজেন্ডার হওয়ায় অনেক দিন আমার পড়াশোনা বন্ধ ছিল। তারপরও হাল ছাড়িনি। আবার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও আমাকে আপন করে নিয়েছে। পড়াশোনা শেষ করে হতে চাই একজন আদর্শ শিক্ষক। দাঁড়াতে চান ট্রান্সজেন্ডারদের পাশে।’

হৃতিকার সহপাঠী মেহেজাবিন বলেন, ‘হৃতিকা আমাদের বন্ধু। তিনি মেধাবী ও ভালো মনের মানুষ। তার সঙ্গে চলতে আমাদের কোনও সমস্যা হয় না। হৃতিকার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে আমরা বন্ধুরা সাহায্য করছি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক বিএম সোহেল বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার হওয়া সত্ত্বেও খুবই ভালো হৃতিকা। পাশাপাশি মেধাবী ও নিয়মিত ক্লাস করে। বাংলা বিভাগ থেকে আমরা তাকে সবধরনের সহযোগিতা করে থাকি।’

অধ্যক্ষ অধ্যাপক হারুন অর রশীদ বলেন, ‘একজন ট্রান্সজেন্ডার নারী নিজের যোগ্যতায় বাংলা বিভাগে অনার্স করছে। তার পড়াশোনা যাতে অব্যাহত থাকে, তা দেখার দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের। এই ট্রান্সজেন্ডার নারীকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো। মূল কথা হলো কাউকে পিছিয়ে রাখা যাবে না। তাই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পাশে সবাইকে দাঁড়াতে হবে।

জাগরণ/স্বদেশ/এসএসকে