• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২০, ০২:৩৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৪, ২০২০, ০৩:১৬ পিএম

কোভিড-১৯

৫৮তম দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াল

৫৮তম দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াল
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা

আক্রান্তের ৫৮তম দিন

........

দেশে প্রথম করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগী শনাক্ত হওয়ার ৫৮তম দিনের মাথায় এসে মোট শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ালো। গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে ৬৮৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত একদিনে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হওয়া রোগী। যা রোববারের (৩ মে) তুলনায় ২৩ জন বেশি। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ হাজার ১৪৩ জনে।

একই সময়ে মারা গেছে আরও ৫ জন। রোববার মারা যাওয়ার সংখ্যা ছিল ২ জন। সব মিলিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্য ১৮২ জন।

নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ১৪৭ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২০৯ জন।

পরিসংখ্যানে দেখা যায় টানা ৭ দিন ধরে দেশে পাঁচশোর বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল ৫৪৯, ২৯ এপ্রিল ৬৪১, ৩০ এপ্রিল ৫৬৪, ১ মে ৫৭১, ২ মে ৫৫২, ৩ মে ৬৬৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।

সোমবার (৪ মে) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১টি কেন্দ্র থেকে ৬ হাজার ২৬০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যা গতকালের চেয়ে ১৬. ৬১ শতাংশ বেশি। নতুন পুরাতন মিলিয়ে ৬ হাজার ৩১৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যা গতকালের ‍তুলনায় ২১. ১১ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮৭ হাজার ৬৯৪ টি। 

তিনি জানান, আরও দু’টি নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে ওই দুইটি কেন্দ্র থেকেও নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হবে।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৫ জন মৃত্যু হয়েছে তারা সবাই পুরুষ। তাদের মধ্যে ৩ জনের বয়স ষাটোর্ধ্ব, একজনের বয়স ৫১-৬০ বছর ও অপরজনের বয়স ৩১-৪০ বছর। তাদের মধ্যে তিনজন ঢাকা, একজন সিলেট ও  অন্যজন ময়মনসিংহে বসবাস করতেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনের নেয়া হয়েছে ৯০ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনের আছেন ১ হাজার ৬৩৬ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯১ জন, এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৭৩ জন।

যারা কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ এবং স্বাভাবিক। তারা স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ থাকবে, তারা যেন এখনও নিজ ঘরে থাকেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) ব্রিফিংয়ে ডা. নাসিমা জানান, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যধি হাসপাতাল, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল (উত্তরা), রিজেন্ট হাসপাতাল (মিরপুর), সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, রাজারবাগ হাসপাতাল ও লালকুঠি হাসপাতালে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দেশের ৬৩টি জেলায় করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে।

শুধু রাঙামাটি জেলাতে এখন পর্যন্ত করোনা রোগীর সন্ধান মেলেনি।

রোববার (৩ মে) ৬৬৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা বলা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে। সেই সঙ্গে আরও দুজনের মৃত্যুর খবর দেয়া হয়। মোট ১০৬৩ রোগীর সুস্থ হওয়ার কথাও বলা হয়।

দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে।পঞ্চম দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয়েছে আগামী ৫ মে পর্যন্ত। তার আগেই আরেক দফা ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে। যার প্রজ্ঞাপন এখনও জারি করা হয়নি। বলা হচ্ছে, এ দফায় ছুটি বাড়িয়ে ১৫ কিংবা ১৬ মে পর্যন্ত করা হবে।

করোনা পরিস্থিতিতে শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের পদক্ষেপ অনেকটা এ রকমই। তবে এর মাঝেও কিছু কিছু দেশ তাদের দেয়া লকডাউন কিছুটা শিথিল করছে। স্পেন, জার্মানি ও ভারত সেই পথে হেঁটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিও তেমনটাই ভাবছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী সোমবার (৪ মে) সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত  মহামারি করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৬৬ হাজার ৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস এ পর্যন্ত ২ লাখ ৪৮ হাজার ২৮২ জন মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১ লাখ ৫৪ হাজার ১৪ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২১ লাখ ৬৩ হাজার ৭০৮ জন। তাদের মধ্যে ২১ লাখ ১৩ হাজার ৬৬৮ জনের শরীরে মৃদু সংক্রমণ থাকলেও ৫০ হাজার ৪০ জনের অবস্থা গুরুতর।

এসএমএম

আরও পড়ুন