
আমার সিনেমা উন্মাদনা শুরু হইবার আগেই কবরী চইলা গেছিলেন আগের প্রজন্মের স্মৃতিময় নায়িকার তালিকায়। ফলে নির্দিষ্ট কইরা তিনার বিশেষ কোনো সিমেনা দেখা হয় নাই। একবার দেখা হইছিল সরাসরি; তখন তিনি রাজনীতিবিদ। জিগাইছিলাম— সরকারি দল তো করতেছেন; মরা সিনেমা শিল্পটারে বাঁচাইবার লাইগা কিছু করেন না ক্যান? তিনি উত্তর না দিয়া ক্ষেপছিলেন। কবরী মারা গেলেন। তার মাত্র একদিন পর মারা গেলেন ওয়াসিম...
রূপকথাধর্মী লোকগল্পের সিনেমাতেই বেশি অভিনয় করতেন ওয়াসিম। রাজা-বাদশা রাজপুত্ররা দেখতে কেমন সেইটা দেখতেই আমি ওয়াসিমের সিনেমা দেখতে যাইতাম। সিমেনা পড়তে আইসা জানছিলাম ওয়াসিমের ঘোড়ায় চড়ার দৃশ্য রেকর্ড করতে ক্যামেরার লোকজনের বাড়তি কারিশমা করতে হইত। কারণ শুটিংয়ের লাইগা ভাড়া দেওয়া পুরান ঢাকার হাভাইত্তা ঘোড়াগুলায় বসলে ওয়াসিমের পা ঠেইকা যাইত মাটিতে; দীর্ঘদেহী মানুষ আছিলেন তিনি...
তবে আমার শৈশব স্মৃতিতে তার উচ্চতা আরো বেশি; এতই বেশি যে রাজার পোশাকে ওয়াসিমরে দেখার কারণে কয়দিন আগে প্রায় শতবর্ষে মইরা যাওয়া বিলাতি রানির স্বামীরে জীবনেও কোনোদিন রাজকীয় মনে হয় নাই আমার...
বিদায় কবরী। বিদায় ওয়াসিম। প্রজন্মের সিনেমা স্মৃতিতে থাইকা যাবেন আপনেরা...