আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় জ্বরের প্রকোপও বেড়ে চলে। বিভিন্ন ভাইরাসজনিত কারণে কিংবা সাধারণ জ্বরও হতে পারে। জ্বরের সময় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। একটি সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। জ্বর হলে কোন বয়সে কোন সময় ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে, এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট ধারণা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বার্তা সংস্থা হেলথ্লাইন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা জানান, কীভাবে এবং কখন জ্বরের চিকিত্সা করা উচিত, তা আপনার বয়স দ্বারা নির্ধারিত হয়। যথাসময়ে যদি চিকিত্সা না করা হয়, তবে জ্বরটি ছোট শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক, বয়স্কদের মধ্যে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
৩ মাস-২ বছরের শিশুদের জন্য
৩ মাস বয়সী শিশুদের দেহের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) বা তার বেশি হলে দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন। এ সময় অন্য কোনো লক্ষণ উপস্থিত না থাকলেও শিশুদের ডাক্তার দেখাতে হবে। ৩ থেকে ৬ মাস বয়সী শিশুদের জন্য ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৮.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) পর্যন্ত জ্বরগুলোর জন্য চিকিত্সার প্রয়োজন হয় না। যদি আপনার শিশুর অন্যান্য লক্ষণগুলো থাকে বা তাদের জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৮.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) ওপরে চলে যায়, তবে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
দুই মাস থেকে দুই বছর বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা যদি ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে (৩৮.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) থাকে, তবে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। জ্বর এক দিনের বেশি সময় ধরে অব্যাহত থাকলে বা সাধারণ ওষুধেও কাজ না হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো উচিত।
২ বছর-১৭ বছর শিশুদের জন্য
২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের সাধারণত তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৮.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) কম থাকলে ওষুধের প্রয়োজন হয় না। তবে যদি বিরক্তি বা পেশি ব্যথার মতো উপসর্গগুলো থাকে, তবে তারা ওষুধ থেকে উপকৃত হতে পারে।
যদি আপনার শিশুটির জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৮.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) ওপরে থাকে এবং খুব অস্বস্তিবোধ করে বা তাদের জ্বর যদি ৩ দিনের বেশি অব্যাহত থাকে, তবে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য
১৮ বা তার বেশি বছরের বয়সীদের সাধারণত ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৮.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) চেয়ে কম জ্বরের জন্য ওষুধের প্রয়োজন হয় না। তবে জ্বর যদি ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৯.৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) ওপরে চলে যায় তাৎক্ষণিক ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গগুলোর সঙ্গে যদি শক্ত ঘাড়, শরীরের যেকোনো জায়গায় তীব্র ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট হওয়ার লক্ষণ থাকে, তবে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বয়স্কদের জন্য
৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রাপ্তবয়স্কদের তাপমাত্রা যদি ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ওপরে চলে যায় বা দুই দিনের মধ্যে না সারে তবে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। জ্বরের সঙ্গে যদি আপনার শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণগুলো থাকে, অবিলম্বে চিকিত্সা নিন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকুন। তবে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে, অন্য কোনো ওষুধের সঙ্গে জ্বরের ওষুধ বিরোধ করবে না।
অন্যান্য নির্দেশিকা
জ্বর প্রায়শই সংক্রমণের লক্ষণ। অন্যান্য রোগের লক্ষণও জ্বর হতে পারে। করোনা, এইচআইভি বা ক্যানসারসহ বেশ কিছু রোগ রয়েছে, যেগুলোর সাধারণ লক্ষণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। কখনো কখনো এই সংক্রমণগুলোর দ্রুত চিকিত্সা করা কঠিন। এ ক্ষেত্রে সে রোগগুলো নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।