• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২১, ০৪:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৮, ২০২১, ০৪:৫৩ পিএম

নারী স্বাস্থ্যে বয়সের প্রভাব

নারী স্বাস্থ্যে বয়সের প্রভাব

পরিবারের সবার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখেন মা। কিন্তু মায়ের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখেন কে? হ্যাঁ, নিজের স্বাস্থ্যের দিকে বেশ উদাসীন নারীরা। সারাদিনের কাজের ভিড়ে শরীরের খারাপ লাগাগুলো চেপে যান তারা।

নারীদের বয়সের উপর তাদের স্বাস্থ্যের প্রভাব পড়ে। কত বয়সে বিয়ে হচ্ছে, এটিও নারী স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। বিয়ের পর নারীরা মাতৃত্বের স্বাদ পান। কত বছর বয়সে বিয়ে হচ্ছে, সে সঙ্গে তাল মিলিয়ে সন্তানও জন্ম দিচ্ছেন। এর বেশ প্রভাব পড়ে নারী স্বাস্থ্যে।

চিকিৎসকদের মতে, বিয়ের বয়স নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। বাল্যবিবাহ, মধ্য বয়সে বিয়ে কিংবা একটু বয়স হয়ে বিয়ে_প্রায়ই সবগুলোই নারী স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। কিছুক্ষেত্রে কম, আবার কিছুক্ষেত্রে বেশি।

বয়স যখন ১৫ বা এর কম

বর্তমানে নারীদের বিয়ের বয়স এসে ঠেকেছে গড়ে ১৮ বছরে। কিন্তু আগে তো বেশিরভাগই হতো বাল্যবিবাহ। দেশের বেশকিছু জায়গায় এ চিত্র এখনো রয়েছে। যদিও বাল্যবিবাহের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় নারীর স্বাস্থ্যে। অল্প বয়সে মা হতে গিয়ে প্রতি ২০ মিনিটে মারা যাচ্ছেন একজন মা। ঝুঁকিতে পড়ে নবজাতকও। প্রতিবন্ধী শিশুর জন্মও হতে পারে। এছাড়া জরায়ু ক্যান্সারে বাল্যবিবাহ অন্যতম কারণ।

ইউনিসেফের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ১৫ বছরের কমবয়সী মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে  বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের হার সারাবিশ্বে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে শতকরা ২৯ ভাগ মেয়েরই বিয়ে হয় ১৫ বছরের কম বয়সে। এর মধ্যে শতকরা দুই ভাগ মেয়ের বিয়ে হয় ১১ বছরের কম বয়সে।

অল্প বয়সে বিয়েতে স্বাস্থ্য সমস্যায় দেখা যায় গর্ভধারণে সময় রক্ত স্বল্পতা, অধিক সময় ধরে ডেলিভারী, গর্ভাশয় ফেটে যাওয়া, গর্ভে বাচ্চার ডিস্ট্রেস, জরায়ুর টিউমার ও ক্যান্সার, ব্রেস্ট টিউমার, হরমোনাল অনেক সমস্যা, ঋতুজনিত সমস্যা হয়।

বয়স যখন ১৮-২৮ বছর

১৮ থেকে ২৮ বয়সে বিয়ে, এই সময়টাাকেই সবচেয়ে নিরাপদ বলেন চিকিৎসকরা। সন্তান জন্মদানেও উপযুক্ত সময় এটি। এছাড়া নারী স্বাস্থ্যের সবচেয়ে সক্রিয় সময় ধরা হয় এই বয়সকে। নারীরা এই বয়সে স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানসিকভাবেও বেশ বলিষ্ট থাকেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কিছু সাধারণ সমস্যা হতে পারে অনিয়মিত জীবনযাত্রায়। এই বয়সী নারীরা জটিল রোগে কম ভোগেন। প্রসাবে ইনফেকশন, রক্ত স্বল্পতাসহ বেশকিছু রোগ হতে পারে। যা নিয়মিত ওষুধ সেবনে সেরেও যেতে পারে। বিয়ের পর নারীর স্বাস্থ্যের পরিবর্তনগুলো সহজেই মানিয়ে নিতে পারে এই বয়সের মধ্যেই বিয়ে হলে। তবে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির (এসিএস) মতে, তরুণীদের মধ্যে ত্বকের ক্যান্সারের প্রবণতা বেশি থাকে। সেদিকে নজর রাখুন।

বয়স যখন ২৮ -৪০ বছর কিংবা তারও বেশি

পরিবারের কারণে কিংবা কাজের ব্যস্ততায় বিয়ে নিয়ে ভাবার সময় হয়নি। তাই বিয়ে সেরে নিতে পেরিয়ে গেছে অনেকটা সময়। এ অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ, বিয়ের পরপরই সন্তান নিয়ে নিন। কেননা বেশি বয়সে বিয়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে সন্তান নেওয়ার সময়। নারীরা এ সময় বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভোগেন। ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক অস্থিরতা কিংবা জরায়ুর নানা সমস্যা ঘিরে ধরে নারীর দেহে। এছাড়াও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের মেটাবোলিজম ক্ষমতাও কমে যায়। তাই খাবারের তালিকাতেও দিতে হয় বাড়তি মনোযোগ। যেকোনও রোগকে নিয়ন্ত্রণে এনে এ সময় গর্ভধারণে বেশ কষ্ট পোহাতে হয় নারীদের।

নারী স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় বিশেষজ্ঞরা তাই সঠিক সময়ে বিয়ের পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে যেকোনও রোগ না লুকিয়ে প্রতিকারের ব্যবস্থা নিলে নারীদের স্বাস্থ্যও সুরক্ষিত থাকবে।