
ধূমপানের বদভ্যাস যারা ছেড়েছেন তাদের সাধুবাদ। তবে গদগদ হওয়ার সুযোগ কম। দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলেও কিন্তু ধূমপানের সমপরিমাণ ক্ষতি আপনার হচ্ছে। গবেষণায় দেখা যায়, দিনে ১০ হাজার কদম হাঁটা সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর। আর এর কম হলে ধীরে ধীরে মানবদেহ তার কার্যক্ষমতা হারাবে।
দৈনন্দিন অনেক কাজই বসে করতে হয়। যাত্রাপথে বা বাসায় কিংবা অফিসে, কাজের প্রয়োজনে অনেক সময় ধরে বসে থাকতে হয়। ভুলেই যাই মিনিট, ঘণ্টা কীভাবে পার হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় বসে থাকায় স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে, যা অনেকেরই অজানা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ৩ ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি সময় বসে থাকা ব্যক্তির দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বেশি। এমনকি তাদের আয়ু ২ বছর কমেও যায়।
দীর্ঘ সময় বসে থাকায় শরীরের পেশিগুলোর নিষ্ক্রিয়তায় রক্তের শর্করা বিপাক কম হয়। যা রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এসবই হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিসের কারণ। এতে রক্তে উচ্চ শর্করা বেড়ে যাওয়ায় নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ায়। এখন হিসাব করে দেখুন প্রতিদিন আপনি কতটা সময় বসে থাকেন।
নিশ্চয়ই ভাবছেন তাহলে বসে না থেকে কীভাবে কাজ করা যায়। আসলে কৌশলটা হচ্ছে কম সময় বসে থাকা। পানি খেতে অফিসের ফিল্টার পর্যন্ত হেঁটে যান। অফিসের ইন্টারকম ব্যবহার কমিয়ে দিন। স্মার্ট ঘড়ির সাহায্যে আপনার সক্রিয়তা পর্যবেক্ষণ করুন। বসে থাকা অবস্থায় হাত পা প্রসারিত করুন, ডানে-বাঁয়ে নাড়ান। ফোনালাপ, চ্যাট কিংবা কাগজপত্র গোছানোর কাজগুলো দাঁড়িয়েই করুন। দাপ্তরিক আলাপ ও পরামর্শ হোক দাঁড়িয়ে বা হেঁটেই।
বাসায়ও বেশি সময় বসে থাকা চলবে না। দাঁড়িয়ে বা হেঁটে ফোনে কথা বলুন । প্রতিদিন বাজার করতে বের হতে পারেন। এতে টাটকা খবারের সুফলও পাচ্ছেন।
গণপরিবহনে বসার পরিবর্তে দাঁড়িয়ে থাকুন। তবে পকেট মার থেকে সাবধান! সামাজিক যোগাযোগ স্মার্ট ডিভাইসে না করে ওই সময়টা বন্ধুদের নিয়ে একসঙ্গে হাঁটতে বের হন।
টিভিতে অনুষ্ঠা্নের মাঝে বিজ্ঞাপন বিরতিতে পাশের ঘর থেকে হেঁটে আসুন। টিভি দেখা সংক্ষিপ্ত করে ওই সময়টা হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। স্মার্টফোন, ফিটনেস ট্র্যাকার বা পেডোমিটারে আপনার শারীরিক সচলতা পর্যবেক্ষণ করুন।
আপনি যাদের সঙ্গে আছেন তারা যদি বসে থাকেন তবে আপনারও বসে থাকার সম্ভাবনা বেশি। কাজেই আপনার কাছের মানুষগুলোকেও সক্রিয় হতে উৎসাহিত করুন সুস্থ থাকুন।