শরণখোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০১৯, ০৭:০৬ পিএম শরণখোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত
শরণখোলার বগী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে- ছবি : জাগরণ

বাগেরহাটের শরণখোলায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) মাধ্যমে নির্মাণাধীন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের বগী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে পূর্ণিমার প্রভাবে বলেশ্বর নদের জোয়ারের তোড়ে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। সাউথখালী ইউনিয়নের বগী গ্রামের নদী সংলগ্ন পাঁচ শতাধিক কাচা ঘরবাড়িতে জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ।

শনিবার (২৩ মার্চ) ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হু হু করে ঢুকছে বাঁধ ভাঙা পানি। পুরো গ্রাম পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। বসতঘরে পানি ঢুকে যাওয়া মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম ও রান্নাবান্না করতে পারছে না। গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। 

এসময় মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম হাওলাদার, শায়সের আলী, আ. জলিল হাওলাদার, সুফিয়া বেগমসহ দুর্ভোগের শিকার বগী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তারা ঘরের মধ্যে পানি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সারা ঘুমাতে পারেননি তারা। গবাদি পশুগুলো আশপাশের উঁচু জায়গায় নিয়ে রেখেছেন। রান্নাবান্না করতে না পারায় বাজার থেকে শুকনা খাবার কিনে খেতে হচ্ছে তাদের।

বগী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রিয়াদুল পঞ্চায়েত বলেন, প্রতিনিয়ত ভাঙছে বেড়িবাঁধ। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙন প্রবণ বগী এলাকায় বেড়িবাঁধের কাজ না করে চায়নার ‘সিএইচডাব্লিউই’ নামের ঠিকাদারী সংস্থা কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছে। ফলে বগী এলাকার হাজার হাজার মানুষ ও সহায় সম্পদ দিন দিন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
 
সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বগী এলাকা বার বার ভাঙছে। কিন্তু, ঠিকাদারদের সেদিকে কোনো গুরুত্ব নেই। এর আগেও বেশ কয়েকবার এখানকার বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা নামমাত্র রিংবাঁধ দিয়েই তাদের দায় সারেন।
 
তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণের আগে এখানে নদী শাসন করা দরকার। ভাঙন রোধ হলে পরবর্তীতে বাঁধ তৈরি করলে সেটি টেকসই হবে। অন্যথায়, বাঁধ নির্মাণ করলে তা কোনো কাজে আসবে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিইআইপি প্রকল্পের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে ওই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। এখানে রিংবাঁধ দিলে তা কোনো কাজে আসবে না। প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় নতুন করে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। 

এব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বলেন, ভাঙনের বিষয়টি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবেন।

কেএসটি