আমের ভালো দামে খুশি বাগান মালিক, নাখোশ ক্রেতা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৯, ০৯:২৩ এএম আমের ভালো দামে খুশি বাগান মালিক, নাখোশ ক্রেতা

গতবারের মত এবারও আমের ভালো ফলনের আশা করছেন ঝিনাইদহের আম চাষিরা। প্রায় দু’সপ্তাহ একটানা খরা হলেও বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় এবং সময়মত পরিচর্যা করায় ফলন ভালো হচ্ছে বলে মনে করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। বাজারে গত সপ্তাহ থেকে স্থানীয় বাজারে আটি ও কলমের আমসহ বাইরের জেলা থেকে আমাদানিকৃত হিমসাগর ও মোহনভোগের সরবরাহও বেড়ে গেছে। তবে রোজার কারণে দাম বেশি হওয়ায় বিক্রেতা বা বাগান মালিকেরা খুশি হলেও ক্রেতারা খুশি হতে পারছেন না। 

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের গাড়াগঞ্জ বাজারে কথা হলো আম ক্রেতা মনিরুল হাসানের সঙ্গে। তিনি জানালেন, গতবার যেসব দেশি আম তিনি প্রতিকেজি ৩০-৩৫ টাকা কিনেছেন রোজার কারণে এবার তা ৬০-৬৫ টাকায় উঠেছে। বাজারে গত কয়েকদিন মেহেরপুর ও কোটচাঁদপুরের হিমসাগর ও মোহনভোগ এলেও তা একশ টাকার ওপরে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। 

জেলার সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদনকারী উপজেলা কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর ও আশপাশের কয়েকজন আম চাষি জানালেন, সচেতনতার কারণে প্রতিটি কৃষকই এখন সুযোগমত যেখানে যেমন পারেন ফলজসহ অন্যান্য গাছ লাগাচ্ছেন। ফলে দিনদিন আম ও অন্যান্য ফলজ গাছের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিক্ষিপ্ত হলেও আমের ফলন বাড়ছে। তবে এবারের অতিরিক্ত গরমে বেশকিছু ফল গাছেই ফেটে নষ্ট হয়ে ঝরে গেছে বলে জানালেন তারা।

আম চাষিদের মতে, চাষিরা আগে পুরোপুরি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল ছিল। সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সচেতনতার ফলে প্রায় সবাই এখন নিয়মিত আমবাগান বা গাছের পরিচর্যা করেন। তাছাড়া, যত্নের অভাবে প্রচুর পরিমাণে আম নষ্ট ও নিম্নমানের হত। কিন্তু ব্যাগিং পদ্ধতি চালু হওয়ায় একদিকে যেমন ক্ষতির হাত থেকে ওইসব আম রক্ষা পাচ্ছে, তা আকারে বড় ও পুষ্ট হওয়ায় ফলনও বাড়ছে। এতে চাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছেন বলে জানান আমচাষিরা।
 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ জেলা অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ২,৭৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে শুধু কোটচাঁদপুর উপজেলাতেই সর্বাধিক ৭১০ হেক্টরে আম চাষ হচ্ছে। উপজেলাওয়ারি আম চাষের জমির পরিমাণ হলো- ঝিনাইদহে ৫৮০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৩৬০ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ৭১০ হেক্টর, মহেশপুরে ৪৮০ হেক্টর, শৈলকুপায় ৪০৫ হেক্টর এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ২৪০ হেক্টর। এবার জেলায় কমপক্ষে ৪৪ হাজার টন আম উৎপাদিত হবে বলে ধারণা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। গত মৌসুমে জেলায় ৪৩,২৫৭ টন আম উৎপাদন হয় বলে সূত্র জানায়।

কেএসটি