গাইবান্ধায় বাঁধ ভেঙে ভেসে গেছে শত শত বসতবাড়ি

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০১৯, ০৬:০২ পিএম গাইবান্ধায় বাঁধ ভেঙে ভেসে গেছে শত শত বসতবাড়ি

গাইবান্ধায় উজান থেকে ভেসে আসা পানি ও কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টির ফলে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও ঘাঘট নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।

গাইবান্ধার ঘাঘট নদীর শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন সোনাইল বাঁধ ভেঙে শত শত বসতবাড়ি, গরু ছাগল, গাছপালা নদীতে ভেসে গেছে। অসহায় মানুষগুলো দিকবিদিক ছোটাছুটি করছে। তাদের অনেকেই ঘরের মধ্যে থাকা খাটসহ অন্যান্য আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়ার আগেই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে উজান থেকে ভেসে আসা প্রবল স্রোত।

রোববার রাত থেকে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে গাইবান্ধার নদী বেষ্টিত সকল এলাকার বাঁধগুলো নরম হয়ে যায়। এদিকে ভারী বৃষ্টি পাতের কারণে রাতেই শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন অংশে ধসের সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে গাইবান্ধা সদরের বোয়ালী ইউনিয়নের ঘাঘট নদীর সোনাইল বাঁধ, খোলাহাটি ইউনিয়নের ঘাঘট নদীর অপর প্রান্তের বাঁধ ভেঙে ফারাজী পাড়া, দশানিসহ নিচু এলাকায় প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতাধিক গ্রাম।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টার দিকে সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকায় ঘাঘট রক্ষা বাঁধের ১শ ৫০ ফুট এবং গোদারহাট এলাকায় সোনাইল বাঁধের প্রায় ১শ ফুট ধসে গেছে। ফলে ওই দুটি বাঁধের এলাকায় অন্তত ১৫টি গ্রামে আকস্মিকভাবে বন্যা দেখা দেয়। এছাড়া ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ওয়াপদা বাঁধ ধসে অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ জানিয়েছেন, বন্যার্ত মানুষের চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার জন্য জেলার চার উপজেলায় ১০০টি মেডিকেল টিম বন্যা কবলিত এলাকায় কাজ করছে।

জেলা প্রশাসক জনাব আব্দুল মতিন বলেন, ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর জন্য এখন পর্যন্ত ৪০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন করে আরও এক হাজার মেট্রিক টন চাল ও দশ লাখ টাকা এবং পাঁচ হাজার শুকনো খাবার প্যাকেটের চাহিদা দেয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান  জানান, ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৭৮–৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে প্রবল বন্যার আশংকা রয়েছে। এজন্য তিনি বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। 

কেএসটি