কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় পরিবারের ওপর হামলা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০১৯, ০৮:৫৫ পিএম কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় পরিবারের ওপর হামলা
কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের পাঁচজনের ওপর হামলা - ছবি : জাগরণ

যশোরের শার্শা উপজেলার উলাশী পূর্বপাড়া গ্রামের গোলাম হোসেনের মেয়ে ঝিকরগাছা মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অঞ্জলী খাতুনকে (২০) উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত কলেজছাত্রী অঞ্জলী আক্তার (২০), অঞ্জলীর মা ফাইমা আক্তার (৪০), পরিবারের সদস্য শাহাজানের স্ত্রী বেবী (৪৫), রাসেল হোসেনের স্ত্রী মনিরা বেগম (৩০), আবু বক্করের স্ত্রী শিরিনা খাতুনকে (২৬) স্থানীয় শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। থানায় মামলা হলেও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। হামলাকারীরা রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন।

আহত কলেজছাত্রী অঞ্জলী খাতুন বলে, ‘দীর্ঘদিন থেকে একই গ্রামের জামাই ভ্যানচালক সাজ্জাদ (২৫) আমাকে কলেজে যাতায়াতের সময় বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে। সুযোগ পেলেই আমাকে কুপ্রস্তাব দিত। পুকুরে গোসলের সময় কৌশলে মোবাইল ফোনে আমার ভিডিও ধারণ করত। ঘটনার দিন সাজ্জাদকে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে প্রথমে আমার মাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। আমার মাকে ছাড়াতে গেলে কোরবান আলীর ছেলে এলাকার জামাই ভ্যানচালক সাজ্জাদ, তার শ্যালক হাফিজুর ও মফিজুর, মঙ্গল খাঁর ছেলে মোস্তফা, আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান ও মেয়ে মুক্তি, নুর আলীর ছেলে মিন্টু, মোস্তফা খাঁর স্ত্রী সুলতানা, আনিছুরের স্ত্রী জেসমিন, মফিখাঁর স্ত্রী শাহিনুর, রাজ্জাক খাঁর স্ত্রী ছায়রাসহ খাঁ বংশের ১৫-২০ জন সদস্য আমাদের পরিবারের পাঁচজনের ওপর অতর্কিত লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়ে মারাত্মক আহত করে চলে যায়। এ সময় আমাদের গলা থেকে স্বর্ণের ৫ ভরি ওজনের ৪টি চেইনও ছিনিয়ে নেয়। আশপাশের লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।’

অঞ্জলী আরো জানায়, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় সাজ্জাদসহ খাঁ বংশের সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে। হামলা করার সময় তাদেরকে মামলা ও সাংবাদিকদের যেন জানানো না হয় সে ব্যাপারেও হুমকি দিয়ে যায়।

অঞ্জলীর মা ফাইমা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়েকে সাজ্জাদ সব সময় উত্ত্যক্ত করত। তাকে নিষেধ করার পরও সে আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিত। এর প্রতিবাদ করতে গেলে প্রথমেই সাজ্জাদ আমাকে কিলঘুষি মারতে থাকে। পরবর্তীতে লাঠি দিয়ে বেধড়ক আঘাত করে। আমাকে আমার পরিবারের সদস্যরা বাঁচাতে এগিয়ে এলে সাজ্জাদের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেদম মারপিট করে আহত করে।’

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার এম এ মারুফ আহত কলেজছাত্রী অঞ্জলীর পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তারা হামলার কারণে বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন। মাথার সিটিস্ক্যানসহ এক্সরে করাতে বলেছি। রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে আঘাত কতটুকু গুরুতর।’

শার্শা থানার এসআই মামুন হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এনআই

আরও সংবাদ