ধর্ষণের শিকার শিশুর কোলে আরেক শিশু

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০১৯, ০১:২৯ পিএম ধর্ষণের শিকার শিশুর কোলে আরেক শিশু

বরগুনায় ধর্ষণের শিকার ১০ বছরের শিশুর কোলে আরেক শিশুর জন্ম হয়েছে। মাত্র চারদিন হয়েছে পৃথিবীর আলো দেখেছে শিশুটি। এখনো নাম রাখা হয়নি। বাবার পরিচয় এখনো নিশ্চিত হয়নি। জন্ম নেয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে চোখের পানি ফেলছে দশ বছরের শিশুটি। সন্তানের পিতৃ পরিচয় পাওয়ার জন্য স্থানীয় সালিসদারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে শিশুটি ও তার পরিবার।

বরগুনার বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর স্থানীয় সালিসদারদের কাছে বার বার গিয়েও ন্যায় বিচার পায়নি শিশুটি।

মাঝে মাঝে শিশুসুলভ আচরণ করছে। কিছুক্ষণ পর পর অঝোরে কেঁদে ওঠে। এরপর সন্তানকে বিছানায় রেখে লজ্জায় বাইরে চলে যায় শিশুটি।

নির্যাতনের শিকার শিশু ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, নয় মাস আগে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের কালাম ব্যাপারীর ছেলে আক্কাস ব্যাপারী (২৫)।

ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয় আক্কাস। প্রায় পাঁচ মাস আগে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান, শিশুটি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার বিষয়টি  স্থানীয় সালিসদারদের জানায় পরিবার। তখন শিশুটিকে বিয়ের জন্য আক্কাসকে চাপ দেয়া হয়। কিন্তু আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার জন্য নির্যাতিত শিশুটির পরিবারকে প্রস্তাব দেয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এ অবস্থায় অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে শিশুটির পরিবার।

নির্যাতিত শিশুটিকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় আক্কাস। এরপর নিরূপায় হয়ে মামলা করে শিশুটির পরিবার। এরই মধ্যে গত বুধবার রাতে ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় নির্যাতিত শিশুটি।

নির্যাতিত শিশুর ভাই বলেন, আমার ছোট বোনের সর্বনাশ করেছে আক্কাস ব্যাপারী। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পারিবারিকভাবে আক্কাসের সঙ্গে আমার বোনের বিয়ে দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে অনেক চেষ্টা করেছি আমরা। স্থানীয় সালিসদারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কিন্তু আক্কাস আমার বোনকে বিয়ে করতে রাজি না হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। 

আক্কাস ব্যাপারীর বাবা কালাম ব্যাপারী বলেন, তার সম্মান হানির জন্য এলাকার একটি কুচক্রী মহল এসব কথা রটিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই মেয়েটির পরিবার তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলার পর থেকে তার ছেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। 

তবে হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বলেছেন, শুরু থেকেই আমরা বিষয়টি জানি। বিষয়টি সমাধানের জন্য ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে বিয়ের জন্য আক্কাস ব্যাপারীকে বলেছি। কিন্তু এতে আক্কাস রাজি হয়নি। পরে নির্যাতিত শিশুটির পরিবারটিকে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য বলেছি এবং সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এরই মধ্যে মামলা হওয়ার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় আক্কাস।

কেএসটি
 

আরও সংবাদ