উখিয়ায় গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ ফেলে পালালেন স্বামী-স্বজনরা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯, ০৯:২৭ এএম উখিয়ায় গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ ফেলে পালালেন স্বামী-স্বজনরা
ইয়াছমিন আক্তার সেতু

হাসপাতালে ৮ মাসের গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ রেখে স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।

হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় ইয়াছমিন আক্তার সেতু (১৯) নামক এক গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বামী আবদু সালাম ও শাশুড়ি।

খবর পেয়ে নিহত ইয়াছমিনের এক আত্মীয় স্কুল শিক্ষক মো. আলী হাসপাতালে এলে ইয়াছমিনের ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার খুলে নিয়ে মৃতদেহ হাসপাতালে রেখে কৌশলে পালিয়ে যান পাষন্ড স্বামী ও শাশুড়ি, ভাই ও বোনেরা।

নিহত গৃহবধূ ইয়াছমিন আক্তার সেতু উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের পূর্ব দরগাবিল বাগানপাড়া এলাকার রফিক উদ্দিনের মেয়ে এবং জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া গ্রামের আবদু সালামের স্ত্রী।

নিহত ইয়াছমিনের মা সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ইয়াছমিনের বিয়ে হয়েছে মাত্র ১০ মাস। মেয়ে এখন ৮ মাসের গর্ভবতী। ইয়াছমিনকে মেয়ের জামাই আবদু সালাম ও তার পরিবারের লোকজন মেরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

তিনি আরো বলেন, জামাতার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে ইয়াছমিনের ঝগড়ার বাহানা তুলে বারবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো তার স্বামী।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে আবদু সালামের বাড়িতে হত্যা করে ইয়াছমিনকে। বুধবার ভোরে গুরুতর অবস্থায় ইয়াছমিনকে শাশুড় বাড়ীর লোকেরা উখিয়ার কোর্টবাজারে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান।সেখানে দায়িত্বরত চিকিত্সক দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সদর হাসপাতালে চিকিত্সক হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।

নিহত ইয়াছমিনের ভাই তোফাইল বলেন, তার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। না হলে হাসপাতাল থেকে তারা কেন পালিয়ে গেলো। তিনি দাবি করেছেন, ইয়াছমিনের ব্যবহার্য স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে গেছে স্বামী ও স্বজনরা।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. আলী জানান, উখিয়ার অরিজিন ও জেলা সদর হাসপাতালে আমি নিহত ইয়াছমিনের সঙ্গে ছিলাম। হঠাৎ সদর হাসপাতাল থেকে স্বামী আবদু সালাম ও তার মা, ভাই ও বোন লাশ রেখে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিন আবদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ইয়াছমিনের মৃত্যু হয়েছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল মনসুর বলেন, এরকম একটি ঘটনা শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তে এটি হত্যা প্রমাণ মিললে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করা হবে।

টিএফ

আরও সংবাদ