হবিগঞ্জের আকলিমা হত্যার রহস্য উন্মোচন

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২০, ০৮:৫০ এএম হবিগঞ্জের আকলিমা হত্যার রহস্য উন্মোচন

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়ায় আকলিমা হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। প্রেমিক সোবান মিয়া (২৮) আকলিমাকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (১ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায় হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।

এর আগে বুধবার ভোররাতে বাসের টিকিট ও কল লিস্টের সূত্র ধরে উচাইল গ্রামে অভিযান চালিয়ে হত্যাকারী প্রতারক প্রেমিক আনোয়ার হোসেন ওরফে সোবান মিয়াকে (২৮) আটক করে পুলিশ। পরে বিকালে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে।

ঘাতক সোবান মিয়া ওই গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে। পেশায় সে একজন কাঠমিস্ত্রি।

পুলিশ জানায়, হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সোবান। আদালতকে সে জানায়, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্ধুর খান ইউনিয়নের জাম্বুরাছড়া গ্রামের হেলাল মিয়ার মেয়ে আকলিমা আক্তার (২৫) প্রায় এক বছর আগে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে ৫ বছরের এক ছেলে সন্তানসহ পিত্রালয়ে অবস্থান করে। প্রায় ৮ মাস আগে সোবানের সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় আকলিমার। তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর আকলিমা গার্মেন্টে কাজ নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। 

গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা থেকে আনোয়ারের কথা মতো শায়েস্তাগঞ্জের ওলিপুরে আসে আকলিমা। সেখান থেকে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় সোবান। সেখানে দুইদিন থাকার পর জানাজানি হয় তারা দুজনেই বিবাহিত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে আকলিমা মুখ খোলতে চাইলে তাকে খুন করার ফন্দি আঁটে সোবান। পরিকল্পনা অনুযায়ি ২৫ ডিসেম্বর ভোরে আকলিমাকে আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে বিয়ের কথা বলে স্থানীয় বেরিখাল এলাকায় যায়। এ সময় ওই এলাকার একটি ঝোঁপে নিয়ে গলায় উড়না পেছিয়ে তাকে হত্যা করে সোবান।

সোবান আদালতকে আরও জানায়, সে নিজেও বিবাহিত। পারিবারিক বিরোধের কারণে বর্তমানে তার স্ত্রী শ্বশুরালয়ে রয়েছে। এরইপূর্বে আকলিমার সাথে তার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। নিজেদের বিবাহের বিষয়টি একে-অপরের কাছে গোপন রেখেছিল। আকলিমাকে বাড়িতে রাখার বিষয়টি পরিবারের অন্য কেউ জানত না। ঘরের একটি কক্ষে তালাবন্ধ করে রেখেছিল তাকে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক মিয়া জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর আকলিমার লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৭ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে আকলিমার ভাই আমীর হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ আকলিমার শরীর থেকে পাওয়া এনা পরিবহনের টিকিট ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে সোবানকে আটক করে।

কেএসটি