দখলদারের খপ্পরে মৃতপ্রায় ‘শাখা বরাক’

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২১, ০৩:২০ পিএম দখলদারের খপ্পরে মৃতপ্রায় ‘শাখা বরাক’

কুশিয়ারা, খোয়াই, সুতাংসহ অসংখ্য নদী বয়ে গেছে হবিগঞ্জের ওপর দিয়ে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘শাখা বরাক’। এটি জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত।

নবীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে শাখা বরাক নদীটি। এক সময় এই নদীকে ঘিরেই বিকশিত হয়েছিল নবীগঞ্জ উপজেলার অর্থনীতি। জেলেদের মাছ আহরণসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সারাদেশের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল ‘শাখা বরাক’ নদী।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর এলাকার তিমিরপুর থেকে বাউসা ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার নদীটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। আবার কোথাও এর অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। রাস্তা-ঘাট আর বড় বড় অট্টালিকা গড়ে উঠেছে নদী দখল করে। যেসব অংশে নদীর কিছুটা অস্তিত্ব রয়েছে সেখানেও ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা।

বাউসা ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব আব্দুর রহিমের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় ‘শাখা বরাক’ নদী দিয়ে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ চলাচল করত। নবীগঞ্জ থেকে সুরমা, কুশিয়ারা দিয়ে ভৈরব এসে বিভিন্ন মালামাল আমদানি-রপ্তানি করা হতো। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমও ছিল এই নদীটি। 

বর্তমানে এই নদী দিয়ে লঞ্চ-স্টিমার-জাহাজ তো দূরের কথা, একটি ছোট নৌকাও যেতে পারে না। ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর থাকায় ঠিকভাবে বৃষ্টির পানিও নিষ্কাশন হতে পারে না।

পৌর এলাকার তিমিরপুরের ব্যবসায়ী কুরুশ মিয়া বলেন, “এক সময় সিলেট ও ভৈরব থেকে লঞ্চ দিয়ে মালামাল আনতাম। কিন্তু গত কয়েক বছরে নদীটি মানুষে দখল করে নিয়েছে। এখন নদীর পথই চিনতে পারি না।”

স্থানীয় বাসিন্দা আহমদ আলী বলেন, ‘প্রভাবশালীরা নদীটি দখলের পর ভরাট করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করেছে। অনেকবার নদীর কিছু অংশ থেকে দখল উচ্ছেদ করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহিউদ্দিন বলেন, “আমি সম্প্রতি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আপাতত কিছু বলা সম্ভব না।”