চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ

বরিশাল প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১, ০১:৩০ পিএম চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ

সামান্য ভুল-ত্রুটিতেই করা হতো নির্মম নির্যাতন। কখনো গরম খুন্তির ছ্যাঁক, কখনো ধারালো চাকুর জখম, কখনোবা দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেওয়া। ১১ বছর বয়সী শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের এমন অভিযোগ উঠেছে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) রেজিস্ট্রার ডা. রবিন চন্দ্র হালদার ও তার স্ত্রী রাখি দাসের বিরুদ্ধে।

নির্যাতিতা গৃহকর্মী নিপার বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হরতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামে। সে ওই গ্রামের ননী বাড়ৈর মেয়ে। নির্যাতনকারী ডা. রবিন চন্দ্রের বাড়িও একই উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে। রবিনের ঢাকার বাসায় কাজ করত নিপা।

জানা যায়, করোনার কারণে অভাবে পড়ে নিপার পরিবার। তাই ছয় মাস আগে স্থানীয় বাসুদেব নামের একজনের মাধ্যমে রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত ডা. রবিন চন্দ্র হালদারের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে তাকে পাঠানো হয়। কিন্তু কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকে ছোটখাটো ভুলে হলেই তাকে বেদম প্রহার করতেন রবিনের স্ত্রী।

নিপার স্বজনদের অভিযোগ, নিপাকে দিনের পর দিন অমানুষিক নির্যাতন করতেন রাখি। ফলে নিপার দুই হাত, হাতের আঙুল, মাথা, গলা, মখমণ্ডল, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। গত রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) মারধরের একপর্যায়ে নিপার মাথায় ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করেন রাখি। এতে তার মাথায় গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। কিন্তু তারপরও নিপাকে হাসপাতালে না নিয়ে বরং মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি কাউকে কিছু বলার জন্যও ভয় দেখানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য নওয়াব আলী জানান, এটি একটি জঘন্য ঘটনা। মানুষ এতটা নির্দয় কীভাবে হতে পারে?

তবে অভিযোগের বিষয়টি সাজানো বলে দাবি করেছেন ডা. রবিন চন্দ্র হালদার। এ বিষয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্ট করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। 

উজিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহতাব হোসেন বলেন, স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১টার দিকে নিপাকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।। শিশুটি কিছুটা ভীতসন্ত্রস্ত। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তবে অধিকাংশই পুরোনো। মাথার একটি আঘাত সাম্প্রতিক হওয়ায় সেখানে দুটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান বলে, শিশুটিকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকায়। তাই এ ব্যাপারে শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।”