গ্রেপ্তার আতঙ্কে সালথা পুরুষশূন্য 

ফরিদপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২১, ০২:৫৯ পিএম গ্রেপ্তার আতঙ্কে সালথা পুরুষশূন্য 

ফরিদপুরের সালথায় লকডাউন না মানাকে কেন্দ্র করে তাণ্ডবের পর জোরদার পুলিশি অভিযানের কারণে উপজেলার আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। 

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে ওই সব এলাকার বাড়িঘরগুলোতে নারী আর শিশু ছাড়া কোনো সদস্য দেখা যায়নি। এ সময় বাড়ির নারী ও শিশুদের চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ দেখা গেছে। বাইরের মানুষ দেখলেই তারা ভয়ে দৌড়ে সরে যাচ্ছেন।

গত ৫ এপ্রিলের ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৬১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নতুন যে চারটি মামলা হয়েছে তার একটি করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বাচ্চু মাতুব্বর। এ মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরেকটি মামলা করেছেন সালথা উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) মোহাম্মাদ হা‌সিব সরকা‌রের গাড়িচালক মো. হাশমত আলী। এই মামলায় ৫৮ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩ থেকে ৪ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

অপর মামলাটি করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী সমীর বিশ্বাস। এ মামলায় ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ৩ থেকে ৪ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

আরেকটি মামলা করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িচালক মো. সাগর সিকদার। এ মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে তিন থেকে চার হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার সালথা থানার এসআই (উপপরিদর্শক) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং প্রায় চার হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে থানায় হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে প্রথম মামলাটি করেন।

ফুকরা বাজার এলাকার করিমন বেগম জানান, সব সময় ভয়ে থাকি। পুলিশ দেখতে দেখতে সারা দিন কেটে যাচ্ছে। বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য নেই। সবাই পালিয়ে রয়েছেন।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, এ ঘটনার পর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মামলার আসামিদের ধরতে পুলিশ দিনরাত জোরদার অভিযান চালানো হচ্ছে। বেশির ভাগ এলাকায় পুলিশি অভিযানের কারণে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে এলাকাগুলো। তারপরও পুলিশ তাদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় যে জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা পুলিশ নেবে। 
 
উল্লেখ্য, লকডাউন না মানাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার বিকেলে সালথার ফুকরা বাজারে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এসি ল্যান্ডের গাড়িতে থাকা সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয়দের। এরপরই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ সালথা উপজেলা পরিষদ, এসি ল্যান্ড অফিস ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়।