চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত ভ্যানচালকের মেয়ের

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২১, ১১:২২ এএম চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত ভ্যানচালকের মেয়ের

অদম্য মেধা ও লেখাপড়ায় জেদি ছিলো বলেই বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বড়লেখার মেয়ে বুশরা আক্তার। এতে আনন্দের চেয়ে অর্থাভাবে ভর্তি হতে না পারার দুশ্চিন্তায় ভুগছে তিনি ও তার দরিদ্র মা-বাবা।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পশ্চিম-দক্ষিণভাগ গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুল হান্নান ও গৃহিণী মমতাজ বেগমের মেয়ে বুশরা আক্তার। অদম্য মেধার কারণে বাবা-মায়ের চরম দারিদ্র্যতার মধ্যে বেড়ে ওঠা ও পারিবারিক প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়াশুনায় তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। ট্যালেন্টফুলে প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি অর্জন করেছেন। অভাব অনটনের মধ্যেও মা-বাবা বুশরার পড়াশুনা বন্ধ করেননি, শুধুমাত্র লেখাপড়ার প্রতি তার খুব জেদি ছিল বলে।

২০১৮ সালে দক্ষিণভাগ এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ও জুড়ী টিএন খানম একাডেমি ডিগ্রি কলেজে থেকে ২০২০ সালের এইচএসসিতে এ প্লাস পেয়ে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বুশরা বেসরকারিতে ভর্তির চান্স পান। কিন্তু দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে ভর্তির এত অর্থ জোগান দেওয়া কোনোমতেই সম্ভব নয়।

বুশরার মা মমতাজ বেগম জানান, পড়ার প্রতি মেয়ের প্রচণ্ড ঝোঁকের কারণেই অর্থকষ্টের মধ্যেও তার পড়াশুনা বন্ধ করেননি। এসএসসি পাশের পর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যায়। এখন ভর্তির চান্স পেয়েছে। তার বাবার একটি ভ্যান গাড়ি ও ৫ শতাংশ বসতবাড়ি ছাড়া আর কোনো সম্বল নেই। এগুলো বিক্রি করেও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মেয়েকে ভর্তি করাতে পারবো না। তিনি তার মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সমাজের বিত্তবান ও কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান।

বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে আনন্দিত হওয়ার চেয়ে অর্থাভাবে ভর্তি না হওয়ার দুশ্চিন্তায় ভুগছেন বুশরা আক্তার। তিনি বলেন, “আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। এখন চান্স পেয়ে দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। দারিদ্র্যের বাধা অতিক্রম করে মেডিকেলে ভর্তির টাকা জোগাড় করা মা-বাবার পক্ষে মোটেও সম্ভব নয়।”

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সমাজের বিত্তবান ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন বুশরা আক্তার।