বছরের প্রথম বৃষ্টিতে সড়কে ধস

নেত্রকোণা প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২১, ০৮:৩৬ পিএম বছরের প্রথম বৃষ্টিতে সড়কে ধস

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের বানিয়াহাটি এলাকায় প্রায় সাড়ে ৪৪ লাখ টাকায় নির্মিত সিমেন্ট কংক্রিটের (সিসি) সড়কটি এক বছর না যেতেই বৃষ্টিতে ধসে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধিনে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে হাওরাঞ্চলের বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন  (হেমলিপ) প্রকল্পের অর্থায়নে সড়কটি নির্মিত হয়েছে। এ তথ্যটি জানিয়েছেন খালিয়াজুরী এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউনূস আলী।

তিনি আরও জানান, ওই সড়ক নির্মাণ কাজের নাম দেওয়া হয়েছে খালিয়াজুরী গ্রোথ সেন্টার (জিসি) কৃষ্ণপুর জিসি ভায়া বানিয়াহাটি রাস্তা পাকাকরণ। এটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা। চুক্তি অনুযায়ী কাজটি শেষ করার তারিখ ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর। কাজটির ঠিকাদার নেত্রকোনার মদন উপজেলার সারোয়ার জাহান।

স্থানীয়রা জানান, কাগজে-কলমে ঠিকাদার সারোয়ার জাহান হলেও কাজটি বাস্তবায়ন করেছেন খালিয়াজুরী উপজেলার লেপসিয়া গ্রামের শহীদুল ইসলাম নামের একজন স্থানীয় বিএনপি নেতা। তিনি পেশায় পাথর ও বালু ব্যবসায়ী। তিনি সড়কটির নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম করলেও সংশ্লিষ্ট তদারকি প্রতিষ্ঠান মানে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।

বানিয়াহাটি গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বাগত সরকার শুভ, বিকাশ সরকার ও অজিত মজুমদারসহ অনেকেই ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ওই সড়কটি নির্মাণে ভরাট করা মাটি ভালো ভাবে শক্ত (কমপেকশন) না করেই সিসি ব্লক বসানো হয়েছে। ব্লকগুলো তৈরিতেও সিঙ্গেলসের পরিবর্তে বেশির ভাগেই দেওয়া হয়েছে মোটা বালু, ভূতু ও মরা পাথর। এসব ব্লক বসানোর সময় একটির সঙ্গে আরেকটি সংযুক্তও করা হয়নি সঠিক নিয়মে। তাই সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক দিনের সামন্য বৃষ্টিতে সড়কটির অধিকাংশ স্থান ধসে পড়েছে।

খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি একই গ্রামের নিহারেন্দু দেব রায় তপু বলেন, নির্মাণ কাজে অনিয়মের কারণে শুধু এখন নয় ইতিপূর্বে আরও এক বার ধসে ছিল সড়কটি। পরে কোনো রকমে ধামাচাপা দিয়ে কিছু অংশের কাজ বাকি রেখেই সড়ক এলাকা ত্যাগ করেন ঠিকাদার। এসব বিষয়ে একাধিক বার এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা রহস্যজনক কারণে অনিয়ম রুখতে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেননি।

ঠিকাদার সারোয়ার জাহানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

তবে, কাজটি বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত শহীদুল ইসলাম বলেন, নির্মিত স্থানে গভীরতা বেশি হওয়ায় সড়কটিতে বরবার ধস নামছে।

বিষয়টিতে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউনূস আলী বলেন, কাজটি নির্মাণে অনিয়ম হয়নি। তবে পুরোপুরি তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ঠিকাদারের প্রায় ১০ লাখ টাকা এখনো আমাদের কাছে আটক রয়েছে। আশাকরি খুব দ্রুতই কাজটি শেষ করে পুরো টাকা ঠিকাদার নিবেন।