‘সুফল’-এ ফিরছে নবাবগঞ্জ বনাঞ্চলের হারানো ঐতিহ্য

দিনাজপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১, ১১:১৮ এএম ‘সুফল’-এ ফিরছে নবাবগঞ্জ বনাঞ্চলের হারানো ঐতিহ্য
ছবি- জাগরণ।

দিনাজপুর (নবাবগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

সরকারের সাস্টেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুডস প্রজেক্ট (সুফল) বা টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের আওতায় নবাবগঞ্জ  উপজেলার ভাদুরিয়া বিট সহ সকল বনাঞ্চলের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ও অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশীয় বৃক্ষ, ফল ও ওষুধিসহ ৩০ প্রজাতির ১ লাখ ১০ হাজার বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে।

জেলা বন বিভাগ, ইএসডিও এবং অন্যান্য একাধিক সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৮ সালের ১ জুলাই সুফল কাজ শুরু করে। আর মাঠ পর্যায়ে বন বিভাগ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। দেশের আট বিভাগের ২৮ জেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬০০ গ্রাম এতে সম্পৃক্ত। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে-নতুন করে ৭৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বনায়ন ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ও চলাচল পথের (করিডোর) উন্নয়ন, বিপন্ন বন্যপ্রাণী (হাতি, শকুন, ঘড়িয়াল, ডলফিন ও বাঘ) সংরক্ষণ, বিপন্ন প্রজাতির গাছপালার লাল তালিকাকরণ, কিছু স্থাপনা নির্মাণ, বনাঞ্চলের আশাপাশের বন নির্ভর ৬০০ গ্রামের ৪০ হাজার পরিবারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথম তিন অর্থবছরে প্রায় এক হাজার ১৫৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুর  নবাবগঞ্জ  বনাঞ্চলেও শুরু হয় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। উপজেলার ভাদুরিয়া বিট এর আওতায়  ৬০ হেক্টর  বনভূমিতে দেশীয় বৃক্ষ, ফল ও ওষুধিসহ ৩০ প্রজাতির ১ লাখ ১০ হাজার বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। রোপনকৃত দেশীয় বৃক্ষের মধ্যে রয়েছে নিম, অর্জুন, বেল, তেঁতুল, জাম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, জলপাই, আমলকি, হরিতকি, বহেড়া, শিমুল, কদম, কম্বলঢেউয়া, চালতা, বাসক, তুলসী, পিপুল, শতমুলী, সর্পগন্ধা, ছাতিম, গোলাপজাম, ডুমুর, উলটচন্ডাল, জারুল, শাল, গজারি ইত্যাদি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওইসব বন বাগানে  শ্রমিকরা চারা রোপন, পানি দেয়া ও আগাছা পরিস্কারের কাজ করে।

অফিসপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী নাড়ী খিরিমন বলেন, ভোর বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বনের বাগানে কাজ করি। আমার মতো এ গ্রামের আরও প্রায় ১৫ জন লোক এখানে কাজ করে। বাড়ির কাছে কাজ পেয়ে আমি খুশি। এখান থেকে প্রতিদিন মজুরি যা পাই, তা দিয়েই আমার সংসার চলে।

ভাদুরিয়া বিট কর্মকর্তা মোঃ নুরলহুদা বলেন, সুফল প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া।  বন বিভাগের  পতিত জমিতেও রোপণ করা হচ্ছে দেশীয় নানা বৃক্ষ। ইতোমধ্যে অনেক গাছে ফল এসেছে। তাই নতুন নতুন পাখ-পাখালির আনাগোনাও বেড়েছে।

 

জাগরণ/এসকেএইচ