ঢাকা সিটি নির্বাচন

বিদ্রোহীদের বেপরোয়া আচরণে বিব্রত দলীয় প্রার্থীরা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২০, ০৪:৩৮ পিএম বিদ্রোহীদের বেপরোয়া আচরণে বিব্রত দলীয় প্রার্থীরা
প্রচারণা স্টিকার ব্যবহার করে ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পোস্টার বিকৃত করে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা- ছবি: বেলায়েত হোসেন বিপ্লব

ঢাকা সিটি নির্বাচন বিদ্রোহীদের বেপরোয়া আচরণে বিব্রত দলীয় প্রার্থীরা নিজেদের যোগ্যতা আর সামর্থ্য প্রমাণের লক্ষ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্ত অবজ্ঞা করে ভোটে দাড়াচ্ছেন, শুরুতে এমনটা ভাবা হলেও ক্রমেই তা ভিন্নরুপ ধারণ করতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় দল মনোনীত প্রার্থীদের বিরোধীতায় রীতিমত বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বিদ্রোহীরা, পরোয়া করছেন না নির্বাচনী আচরণবিধি বা স্বাভাবিক সৌজন্যতা প্রদর্শনের বিষয়টিও।

সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর পদ প্রার্থীদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। দলীয় প্রার্থীদের প্রতি নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের এ ধরনের বেপরোয়া আচরণে রীতিমত চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কপালে। এদিকে বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মাঠের প্রচারণায় নামা আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বলছেন, নির্বাচনের শো ডাউনে খোদ বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরাও এতটা বিব্রত করছে না। তাদের 'জয় বাংলা' যে নমিনেশন পেপার প্রাপ্তি বা পদ প্রাপ্তির সঙ্গে সুর পাল্টায় তা এভাবে জানান দিয়ে জনগণের মাঝে দলের সম্মান ক্ষুণ্ণ করার যে অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে তা অসহনীয়।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) উত্তর সিটির বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে সরেজমিনে গিয়ে এই অভিযোগের নজির চোখে পড়েছে। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই দলীয় প্রার্থীদের কন্ঠে শোনা যায় বিদ্রোহীদের নিয়ে নানা অভিযোগের কথা।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটির সর্ব উত্তরে অবস্থিত ৫৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ দৈনিক জাগরণকে জানান, দলীয় প্রার্থীদের প্রতি বিরোধীতা প্রদর্শন ও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশের পাশাপাশি দলীয় প্রধানের নির্দেশও অমান্য করেছেন এ সকল প্রার্থী। কিন্তু এরপরেও ঘরের সন্তানদের প্রতি উদার থেকেছে কেন্দ্র, উন্মুক্ত রাখা হয়েছে তাদের নিজ দায়িত্বে ভোটে দাঁড়ানোর সুযোগ। অথচ তারা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থীর সমর্থনে যেমন মাঠে নামেননি তেমনি এখন তারা যেভাবে আমাদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া আচরণ প্রদর্শন করছেন তা আপত্তিকর।

তবে নিজের জয়ের বিষয়ে বেশ আশাবাদী এই কাউন্সিলর প্রার্থী দৈনিক জাগরণকে বলেন, দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিচার-বিবেচনার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীতা। যাদের মাঝে আমিও একজন। অথচ দলীয় প্রার্থী হিসেবে আমাকে তারা সামান্যতম সহযোগিতা তো দেয়ইনি বরং নানা প্রকার মিথ্যাচার ও বানোয়াট দলিলাদির দ্বারা প্রমাণের চেষ্টা চালায় যে আমি আওয়ামী ঘরনার রাজনীতিক নই! শুধু তাই নয় আমার সমর্থকদের প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচ্ছন্ন হুমকি, আমাকে সমর্থন করায় এলাকার শিক্ষিত যুবকদের ফোনে হুমকিও দেয়া হয়। এগুলো কোনোভাবেই একজন আওয়ামী আদর্শের রাজনীতিকের আচরণ হতে পারে না। তবে তাদের সকল অপচেষ্টা প্রতিহত করা হবে আমার এলাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাকে আমি অব্যর্থ প্রমাণ করবো জনগণের ভোটে আবারও ৫৪ নং ওয়ার্ডবাসীর সেবক নির্বাচিত হয়ে। আগামী এক তারিখ এই স্বার্থবাদী ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ইভিএমের মাধ্যমে এবার ডিজিটাল জবাব দেয়া হবে ইনশাহ আল্লাহ।

এই ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন মো. সোহেল শেখ হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। আর মো. জাহিদুল হাসান তুরাগ থানা স্বোচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।

বিদ্রোহীদের ভারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩০টিতে ৫ থেকে ১০ জন পর্যন্ত প্রার্থী রয়েছে। এগুলো হল- ৪, ৯, ১১, ১২, ১৯, ২৬, ২৮, ৩২, ৩৬, ৩৯, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৫, ৫৬, ৫৭, ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৬, ৬৭, ৬৯ ও ৬৪ নম্বর ওয়ার্ড। আর ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টিতেও পাঁচ থেকে নয়জন করে প্রার্থী ভোট করছেন। এই ওয়ার্ডগুলো হল- ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ১১, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ২০, ২৩, ২৫, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৫, ৩৬, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪৩, ৪৭, ৪৮, ৪৯ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড।

এসকে