চসিক নির্বাচন স্থগিত

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২০, ০২:৫৭ পিএম চসিক নির্বাচন স্থগিত

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শঙ্কা থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন নির্ধারিত তারিখে অনুষ্ঠানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিমের আপত্তি না থাকলেও বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাত নির্বাচন স্থগিতের পক্ষে। চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের পক্ষ থেকে নির্বাচন স্থগিতের দাবি উঠলেও কমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্তে জানায়নি। 

এ দিকে নির্বাচন স্থগিতের কোনো সিদ্ধান্ত না জানালেও শুক্রবার (২০মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। প্রায় ১৫ হাজার কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রথমদিনে ৩ হাজার কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে অংশ নিবেন বলে নির্বাচন কমিশন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নির্বাচন জনগণের জন্য। দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাছাড়া এ শঙ্কা থেকে মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

তিনি আরও বলেন, যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষ কেন্দ্রমুখী হচ্ছে না, সেখানে আপদকালীন সময়ে ভোট দিতে যাবে তেমনটা আশা করা বোকামি। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকায় নির্বাচন কমিশন যেখানে সমালোচনায় বিদ্ধ সেখানে তারা আবারও ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজনে অবস্থান করছে।

নির্বাচন স্থগিতের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিমের সরাসরি বক্তব্য পাওয়া না গেলেও এর আগে বহুবার তিনি এ প্রশ্নে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নির্বাচন স্থগিতের কোনো প্রয়োজন নেই, দেশে এখনো সে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রধান সমন্বয় ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বলেন, কমিশন এখনো নির্বাচন স্থগিত করেনি। নির্বাচন শিডিউল চলমান থাকা পর্যন্ত আমরা অবশ্যই করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা আছি। আমরা বেশি জনসমাগম হয় এ ধরনের প্রচারণা সামনে কমিয়ে দেব।

তিনি বলেন, নির্বাচন আচরণবিধি মেনে চললেই করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা নেই। বেশি মানুষের সমাগম এড়িয়ে ডোর টু ডোর প্রচারণায় করোনা সংক্রমণের ভয় নেই বলে তিনি দাবি করেন।

একই অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে যে কথাটা বলা হচ্ছে, সেটা যাদের উপসর্গ দেখা যায় তাদের জন্য। আমাদের যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সেটা বন্ধ করে দেওয়ার কথা তো বলা হয় নাই। আমাদের সকল স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে, এর মধ্যে আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেব।

আওয়ামী লীগ নেতাদের উপরোক্ত বক্তব্য থেকে স্পষ্ট তারা নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠানের পক্ষে। অপরদিকে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান শুক্রবার নির্বাচনি প্রচারণা চলাকালীন সময়েও নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এ দিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের এই ঝুঁকির মধ্যে প্রশিক্ষণের জন্য জমায়েতের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্বাচনে ডাক পাওয়া কর্মকর্তারা। সরকার যেখানে ৫ জনের বেশি মানুষের জমায়েতে নিরুৎসাহিত করছে, সেখানে নির্বাচন কমিশনই কয়েক হাজার কর্মকর্তা নিয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণের আয়োজন করছে। এমন ঘটনায় বিস্মিত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল। করোনা ভাইরাসের সতর্কতাবিধি ভঙ্গ করে প্রশিক্ষণ সমাবেশ অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকেই। 

প্রশিক্ষণের পর আছে মক ভোটিং। এটি অনেকটা নির্বাচনের আদলেই হয়। সব নির্বাচন কর্মকর্তাকেই এদিন নিজ নিজ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে হয়। আগ্রহী ভোটারদের ইভিএমে ভোট গ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটিই সারা দিন দেখাতে হয়। 

এ দিকে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ ও নাজুক এ পরিস্থিতিতে কিছু ঠুনকো যুক্তিতে ভোট গ্রহণের বিষয়ে কমিশনের বক্তব্যকে একগুঁয়েমি বলেই মন্তব্য নাগরিকদের।