কোরিয়ান সিনেমা মাতাচ্ছেন বাংলাদেশি যুবক

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২১, ০৫:৩৮ পিএম কোরিয়ান সিনেমা মাতাচ্ছেন বাংলাদেশি যুবক

নারায়নগঞ্জ থেকে মাহবুব আলম পল্লব জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে গিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় তার। জড়িয়ে পড়েন চলচ্চিত্র দুনিয়ায় সঙ্গে। অভিবাসী কর্মী থেকে হয়ে যান নায়ক। এখন সেখানে তিনি মাহবুব লি নামে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

অভিবাসী কর্মী থেকে অভিনেতা হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মাহবুব লি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “অভিবাসী কর্মী হিসেবে প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হতে হয় আমাদের। এ কারণে নিজে অভিবাসী হয়েও অন্যদের নিয়ে কাজ করা শুরু করি। একটা সময় বুঝতে পারি, নিজেদের জন্য গণমাধ্যম তৈরি করা দরকার। তৈরি করতে থাকি ডকুমেন্টারি। অভিনয় বা চলচ্চিত্র নিয়ে একেবারেই অভিজ্ঞতা ছিল না আমার। পরিকল্পনা ছিল ২-৩ বছর সেখানে থাকব। তারপর দেশে আসব। তবে সেটা হয়নি। ঘটনাক্রমে যুক্ত হয়ে যাই চলচ্চিত্রে।”

প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার মিডিয়া প্রবাসীদের তেমন কোনো সুযোগ দিচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে ২০০৪ সালে ডকুমেন্টারির কাজ শুরু করেন। এরপর ‘দ্য রোড অব দ্য রিভেঞ্জ’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

নায়ক হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ ছবির পরিচালক আমাকে চিনতেন। এখানে আমার দায়িত্ব ছিল স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করা ও একজন হ্যান্ডসাম নায়ককে খুঁজে দেওয়া। খুঁজতে গিয়ে দেখি, মনের মতো কাউকেই পাচ্ছি না। কিন্তু পরিচালক যে বিষয়গুলো চান, তার সবই আমার মধ্যে আছে। নির্মাতাকে গিয়ে বললাম, আমি অভিনয় করলে কেমন হয়? তিনি বললেন, মাহবুব তুমি হ্যান্ডসাম, ভাষাও জানো, ভিসারও সমস্যা নাই। কিন্তু তোমাকে ওজন কমাতে হবে। এভাবেই অভিনয় করা শুরু।”

বান্ধবীকে নিয়ে চলচ্চিত্রটি। প্রথম ছবিই জেনজু উৎসবে দুটি পুরস্কার পেয়ে যায়। যার ফলে কোরিয়ান মিডিয়ায় পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসেন মাহবুব। তার অভিনীত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হোয়ার ইজ রনি’ মুক্তি পায় ২০০৯ সালে। একই বছরে মুক্তি পায় ‘বান্ধব’ চলচ্চিত্রটি। ছবিটি দেশ-বিদেশে আলোচিত হয়।

নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজে পড়াশোনা করা মাহবুব এখন দক্ষিণ কোরিয়ান চলচ্চিত্র শিল্পে সরাসরি যুক্ত আছেন। পাশাপাশি কাজ করছেন চলচ্চিত্র নির্মাণ ও পরিবেশনায়। বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়ার পরিচালকও তিনি।