নারীদের ২০৬৩ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে: জাতিসংঘ

ইশতিয়াক হোসেন প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২১, ০৯:৪৯ পিএম নারীদের ২০৬৩ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে: জাতিসংঘ

৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটি বিশেষ একটি দিনে পালন হলেও, নারীরা প্রতিদিনই স্ব স্ব ক্ষেত্রে অর্জন করছেন সফলতা। এই সফলতার রূপ  আপাত দৃষ্টিতে না পরলেও বিশ্বের দরবারে নারীদের কীর্তিমান অবস্থান জানান দেয় তাদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প। সফলতার এই পথও সহজ নয়। এগিয়ে যাওয়ার পথে বহু বাধা বিপত্তির মোকাবেলা করতে হয়েছে নারীদের। তবে সংগ্রামী নারীরা কিন্তু  থেমে যাচ্ছে না তাদের অগ্রযাত্রায়।

নারীরা তাদের অর্জন, পরিশ্রম, যোগ্যতা তুলে ধরে এবং অধিকারের স্বীকৃত আদায়ের জন্য একটি বিশেষ দিনকে নির্বাচন করে। যে দিনটিকে পরবর্তীতে নারী দিবস হিসেবে ১৯৭৫ সালে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ।

পারিবারিক বা ব্যক্তিগত জীবন থেকে পেশাদার জীবন, সামাজিক জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এই আসুবিধা ও সমস্যার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি নারী দিবসের অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয়।
এ বছরের নারী দিবসের থিম হচ্ছে Women in leadership: an equal future in a COVID-19 world। অর্থাৎ "নেতৃত্বে নারী: কোভিড ১৯ পৃথিবীতেও সমান ভবিষ্যৎ অর্জন।"

প্রথমত, নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ এই থিমে বলা হচ্ছে।। দ্বিতীয়ত, কোভিড মহামারিতে জর্জরিত বিশ্বকে পুনরুদ্ধারে নারীদের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নারীদের অধিকার রক্ষা করে সমান ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা থিমের অন্যতম উল্লেখ্য বিষয়। 

জাতিসংঘের তথ্য মতে, বিশ্বের তিনটি দেশের সংসদে ৫০ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ রয়েছে। আর ২২টি রাষ্ট্রের ক্ষমতায় আছেন নারীরা। এই পরিসংখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিশ্বে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারনী অবস্থানে নিজের স্থান পাকা করতে নারীদের ২০৬৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

২০২১ সালের ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের সমীক্ষায় দেখা যায়, কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে বিশ্বব্যাপী নারী চিকিৎসাকর্মীরা পুরুষ কর্মীদের তুলনায় ১১ শতাংশ হারে কম বেতন পাচ্ছেন। ৪৩ কোটি বেশি নারী ১৩৫ টাকার চেয়েও কম আয় করছেন। অন্যদিকে, করোনা মহামারিতেও পুরুষদের তুলনায় নারীদের চাকরি ১৯ শতাংশ বেশি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ফলে প্রায় ৫ কোটি নারী দারিদ্রে পতিত হয়েছে। 

অথচ কোভিড মহামারির যুদ্ধে চিকিৎসাকর্মীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী। চিকিৎসাসহ টিকা গবেষণা, সেবিকা— সব ক্ষেত্রেই নারীদের উপস্থিতি মহামারির পরিস্থিতিকে উন্নত করেছে। অবাক বিষয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ২৪.৭ শতাংশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী হচ্ছেন নারী।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নারীর অবস্থানও বদলাচ্ছে। মেধার দিক থেকে যেমন, তেমনি সাহসী দক্ষতার ক্ষেত্রেও নারীরা এগিয়ে। নারীদের বাদ দিয়ে কোন কিছুই সঠিক ও সম্পূর্ণভাবে সম্ভব নয়। 

কাজেই বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে এই নারী দিবসে সকলের অঙ্গীকার হবে, সিদ্ধান্তের টেবিলে নারীদের অবস্থান নিশ্চিত এবং বয়স, জাতী, ধর্ম নির্বিশেষে সকল অধিকার সমুন্নত ও নিশ্চিত করে নারীদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরির সুযোগ করে দেওয়া।