বর্ষবরণ উৎসবে নারী শ্লীলতাহানি মামলা

৪ বছরে সাক্ষ্য গ্রহণও শুরু হয়নি

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০১৯, ১২:০৩ পিএম ৪ বছরে সাক্ষ্য গ্রহণও শুরু হয়নি

বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে ২০১৫ সালে। এরপর ৪ বছর কেটে গেছে, তবে এ পর্যন্ত মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণও শুরু করা যায়নি।

তাছাড়া ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ৮জনকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ধরিয়ে দিতে তৎকালীন পুলিশ প্রধান (আইজিপি) লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণাও করেছিলেন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত কাউকে ধরা হয়নি। 

পরবর্তীতে ওই মামলায় শুধু একজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।

ঘটনার বছর দুয়েক পর ২০১৭ সালের ১৯ জুন একমাত্র আসামি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট, ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি, ১২ ফেব্রুয়ারি, ৬ মে , ২৬ জুন, ৯ আগস্ট, ২১ অক্টোবর ও সর্বশেষ চলতি ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটির সাক্ষীর জন্য ধার্য তারিখ থাকলেও কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি।

আগামী ১৭ জুন মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।

বাংলা নববর্ষের দিন ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যার ওই ঘটনায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই বছর  ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। ওই প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক একমাত্র কামালকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ‘‘তদন্তে ৮ লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৩৪ জনকে।

এরপর আর এগোয়নি এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম। অভিযোগ গঠনের পর আজ পর্যন্ত কোনো সাক্ষীই আদালতে সাক্ষ্য দিতে উপস্থিত হননি। সাক্ষী না আসায় ঝুলে আছে আলোচিত ওই মামলার বিচার কার্যক্রম।  

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু জানিয়েছেন, সাক্ষীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হলেও তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। তার মতে, পুলিশের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, এই মামলায় সাক্ষীদের ঠিকানায় যে সমন জারি করা হয়েছে তা তামিল হচ্ছে। সাক্ষীরা সম্মানিত ব্যক্তি। তাদের সাক্ষ্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আনিছুর রহমান বলেন, মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আটটি ধার্য তারিখ পার হয়েছে। এর মধ্যে কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় দেরি হচ্ছে।

তিনিও মনে করেন, রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো। আইনজীবী বলেন, সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হলে তাদের জেরা করব। আমার আসামি কামাল এ মামলায় খালাস পাবে- এটা আমার আশা।

এমএ/এসএমএম