রোজাদারের অন্তরে থাকতে হবে খোদা-ভীতি

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ১১, ২০১৯, ০৮:২৯ এএম রোজাদারের অন্তরে থাকতে হবে খোদা-ভীতি

আজ শনিবার (১১ মে), পঞ্চম রমজানুল করীম। 

রোজার আসল উদ্দেশ্য পেট খালি থাকা মনের অসাধু ইচ্ছাসমূহ শেষ হয়ে যাওয়া এবং রোজাদারের অন্তরে খোদা-ভীতি সৃষ্টি হওয়া। আর অধিক খাওয়ার দ্বারা এই উদ্দেশ্য নস্যাৎ হয়ে যায়। অতএব ইফতারের মধ্যে এ পরিমাণ খাবে যে পরিমাণ অন্য সময় রাত্রে খাওয়া হয়। এতো বেশি খাবে না যার দ্বারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সম্পূর্ণ কোটা পূর্ণ হয়ে যায়। যদি এমন হয় তাহলে রোজার আসল উদ্দেশ্য অর্জিত হয়। (হাশিয়াতু ত্বহতাবী আলা মারাকিযুল ফালাহ খণ্ড : ২. পৃ: ২৯৪)

রোজার উদ্দেশ্য যৌনশক্তি এবং জৈবিক শক্তি হ্রাস করা এবং অন্তরালোকময় শক্তি এবং ফেরেশতাসুলভ শক্তি বাড়ানো। অতএব সাহরি এবং ইফতারের মধ্যে অবশিষ্ট ১১ মাসের থেকেও কম খাবে, যেন উদ্দেশ্য অর্জন হয়। (হাশিয়াতু ত্বহতাবী আলা মারাকিযুল ফালাহ খণ্ড : ২ পৃ: ২৯৪)

পূণ্যের বসন্তকাল রমজান। যেভাবে মানুষ ব্যবসার মৌসুমে অধিক মেহনত করে, নিজের অন্য সকল ব্যস্ততা বাদ দিয়ে, অন্যদের থেকে ছুটি নিয়ে নিজের খানাপিনার পরোয়া করে না, রাতে ঘুমানোর চিন্তা করে না, সর্বদা এই পেরেশানিতে নিমগ্ন থাকে যে, আমি কিভাবে এই মৌসুমে অধিক উপার্জন করতে পারবো। কেননা তার বিশ্বাস এই যে, এটা অল্পদিনের পরিশ্রম, তারপর আরাম করা যাবে। তেমনিভাবে রমজানুল মোবারক নেকি কামানোর মৌসুম যে নিজের গোনাহসমূহ থেকে ক্ষমা করিয়ে নিতে চায়, আল্লাহপাকের নৈকট্য অর্জন করতে চায় তার জন্য হলো এই মাসটা একটি মৌসুমের মতো। 

ঈমানদারদের উচিত যখন তারা রোজা রাখবে তখন তাদের রোজা যেন কেবল খানাপিনা থেকে বিরত থাকার মাঝেই সীমাবদ্ধ না হয় বরং রোজাদারের চক্ষুদ্বয় যেন রোজাদার হয়, অন্তর রোজাদার হয়। কানও রোজাদার হয়, জবানও রোজাদার হয়, লজ্জাস্থানও রোজাদার হয়। যখন এভাবে মাথার চুল থেকে নিয়ে পায়ের নখ পর্যন্ত সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রোজাদার হয়ে যাবে তখন রাব্বুল ইজ্জত ইফতারের সময় নির্সন্দেহ দোয়া কবুল করবেন। (মিশকাত শরীফ খণ্ড : ১. পৃ: ১৭৩)

রামজানুল মোবারক এর উদাহরণ— ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ৩০ পাতাবিশিষ্ট জমা বইয়ের মতো। এরমধ্যে রোজা রেখে এবং নেক আমল করে, যা কিছু লিখে নিবে সেটা আখেরাতের অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাবে। অতএব প্রত্যেক ব্যক্তির এ ব্যাপারে চিন্তা করা উচিত যে, সে আখেরাতের অ্যাকাউন্টে কি পরিমাণ সওয়াব জমা করেছে। (মিশকাত শরীফ খণ্ড : ১. পৃ: ১৭৩)

নবীয়ে করীম (সা.) এরশাদ করেন, জান্নাতের একটি গেট আছে তার নাম হলো রাইয়ান। ক্বিয়ামতের দিন এই গেট দিয়ে শুধু রোজাদারগণ প্রবেশ করবেন। তাদের ব্যতীত অন্য কোন বান্দা এই গেট দিয়ে জান্নাতের প্রবেশ করতে পারবে না। আওয়াজ দেওয়া হবে, রোজাদারগণ কোথায়? সঙ্গে সঙ্গে রোজাদারগণ দাঁড়িয়ে যাবেন তারা ব্যতীত অন্য কেউ এই গেট দিয়ে প্রবেশ করবে না। তখন তারা ভেতরে প্রবেশ করামাত্রই ওই গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। (মিশকাত শরীফ খণ্ড : ১. পৃ: ১৭৩)

এসএমএম