এরিক মারিয়া রেমার্ক-এর ১২৩ তম জন্মজয়ন্তী

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২১, ০১:১৮ এএম এরিক মারিয়া রেমার্ক-এর ১২৩ তম জন্মজয়ন্তী
ছবিঃ জার্মান সাহিত্যিক এরিক মারিয়া রেমার্ক।

জার্মান সাহিত্যিক এরিক মারিয়া রেমার্ক তাঁর যুদ্ধবিরোধী উপন্যাস 'অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট'-এর জন্য দুনিয়াজোড়া খ্যাতি এবং পরিচিতি। মানবতার দর্শনে ঋদ্ধ এই উপন্যাস সারা বিশ্বের মানুষের কাছে যুদ্ধের বীভৎসতা তুলে ধরার এক অনবদ্য দলিল।

মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৯১৬ সালে তাঁকে বাধ্যতামূলক জার্মান সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, বীভৎসতা, ধ্বংসযজ্ঞ তিনি নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করেন। যুদ্ধে গোলার বিস্ফোরণে তার ডান হাত, বাঁ পা ও ঘাড় ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। 

তাঁর ছদ্মনাম ছিল এরিক পল রেমার্ক। রেমার্ক বিশ্বসাহিত্যে এক অনন্য নাম। নানা রচনায় যুদ্ধের চরম বিভীষিকার কথা বলে লেখক রেমার্ক আসলে শান্তির কথাই বলতে চেয়েছেন। বিশ্ব সাহিত্য সম্ভারে যে কয়জন মানবতাবাদী যুদ্ধবিরোধী লেখক রয়েছেন তাদের মধ্যে এরিক মারিয়া রেমার্কের স্থান প্রথম কাতারে। ১৯৩১ সালে প্রকাশিত হয় মারিয়া রেমার্কের আরেকটি উপন্যাস 'দ্য রোড ব্যাক'। নিখুঁত বাস্তবতার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা সাহিত্যে তুলে আনার ক্ষেত্রে মারিয়া রেমার্ক ছিলেন অগ্রগণ্য।তাঁর এই বর্ণনারীতি পরবর্তী প্রজন্মের সাহিত্যিকরা অনুসরণ করেছেন।

নাৎসিদের অত্যাচারের ফলে ১৯৩২ সালে মারিয়া রেমার্ককে নির্বাসিত জীবনে যেতে হয়। তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কারণে তার এক বোনকে মৃত্যুদণ্ডেও দণ্ডিত করা হয়। হিটলার ক্ষমতা গ্রহণের পর তার সব বইয়ের কপি পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং বইগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৪৭ সালে রেমার্ক আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। 

‘অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’সহ লিখেছেন দারুণ সব উপন্যাস-‘দ্য ড্রিম রুম’,‘দ্য স্পার্ক অব লাইফ’, ‘এ টাইম টু লাভ এ্যান্ড এ টাইম টু ডাই’, ‘হ্যাভেন হ্যাজ নো ফেভারিটস’, ‘ দ্য নাইট ইন লিসবন’, ‘দ্য প্রমিস ল্যান্ড’, ‘শ্যাডোস ইন প্যারাডাইস’, ‘থ্রি কমরেডস’, ‘ব্ল্যাক অবিলিস্ক’ প্রভৃতি। যুদ্ধ মানুষের জীবনকে তছনছ করে দেয়। তার সহজ স্বাভাবিক জীবনকে ভেঙ্গে দেয়। রেমার্ক নিজের চোখে একজন সৈনিক হিসেবে প্রথম মহাযুদ্ধের বিভীষিকা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তাই লেখনীর মধ্য দিয়ে বারবার ঘুরেফিরে যুদ্ধবিরোধী কথাই বলতে চেয়েছেন। রেমার্ক তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য ব্ল্যাক অবিলিস্ক’ এ বলেছিলেন, ‘একজন মানুষের মৃত্যু একটি ট্রাজেডি কিন্তু অসংখ্য মানুষের মৃত্যু একটি পরিসংখ্যান’।

তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি-‘জীবনে যখন আরও কোনো কিছু পাবার অপেক্ষা থাকে সেটির চেয়ে ভয়াবহ আর কিছু নেই’। 

১৮৯৮ সালের ২২ জুন জার্মানির ওয়েস্ট ফেলিয়ার ওসনাব্রায়কে এই মহান মানুষটি জন্মগ্রহণ করেন।

জাগরণের পক্ষ থেকে তাঁর জন্মদিনে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি। 

জাগরণ/এসকেএইচ