বহু ভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ‍‍`র আজ মৃত্যুবার্ষিকী

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২১, ১১:৫৮ এএম বহু ভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ‍‍`র আজ মৃত্যুবার্ষিকী
ফাইল ফটো।

বহু ভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। উপমহাদেশের স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট শিক্ষক ও দার্শনিক এই মহান ব্যক্তিত্বের ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ্ হলের পাশে সমাহিত করা হয়। ভাষাক্ষেত্রে তাঁর অমর অবদানকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে ঐ বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ঢাকা হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহীদুল্লাহ্ হল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই জন্ম নেন এই মনীষী।

এক সময় বাংলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালে বাংলা নামে কোনো স্বতন্ত্র বিভাগ ছিল না, ছিল সংস্কৃত। তখন সংস্কৃতের প্রভাব ছিল অতি শক্তিশালী। ১৯৩৭ সালে এই মহান সৈনিক সেই প্রভাব থেকে বাংলাকে মুক্ত করেন। কারণ, ১৯৩৭ সালেই বাংলা স্বতন্ত্র বিভাগের মর্যাদা পায় এবং সেই পৃথকীকৃত বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ হন ড.শহীদুল্লাহ্। 

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইমেরিটাস অধ্যাপক পদ লাভ করেন। একই বছর ফ্রান্স সরকার তাঁকে সম্মানজনক পদক ‘নাইট অব দ্য অর্ডারস অব আর্টস অ্যান্ড লেটার্স’ প্রদান করে। বিভিন্ন ভাষায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌র দখল ছিল অসাধারণ ও অসামান্য। উর্দুভাষার অভিধান প্রকল্পেও তিনি সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। পরে পূর্ব পাকিস্তানি ভাষার আদর্শ অভিধান প্রকল্পের সম্পাদক হিসেবে বাংলা একাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৬১-১৯৬৪ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির ইসলামি বিশ্বকোষ প্রকল্পের অস্থায়ী সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক গঠিত বাংলা একাডেমির পঞ্জিকার তারিখ বিন্যাস কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হন। তার নেতৃত্বে বাংলা পঞ্জিকা একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত রূপ পায়।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সব সময়ই সাহিত্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এম এ পাশ করার পরই তিনি বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির সম্পাদক হন। ১৯৪৮ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্যারিসের সরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি (১৯২৫) লাভ করেন।

২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার এক জরিপে শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ কুড়িজন বাঙালির তালিকায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর স্থান হয় ১৬তম।

প্রাচ্যের অন্যতম সেরা এই ভাষাবিজ্ঞানী বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে যে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং ভূমিকা রেখেছিলেন, তার ফলেই এই ভূখণ্ডে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পথ অনেকখানি প্রশস্ত হয় বলে মনে করেন ভাষা বিষয়ক গবেষকরা।


জাগরণ/এসকেএইচ