‘কাজুবাদামের মতো উচ্চমূল্যের ফসলে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার’

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ১২, ২০১৯, ০৭:২৯ পিএম ‘কাজুবাদামের মতো উচ্চমূল্যের ফসলে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার’
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করেন কাজুবাদাম উৎপাদনকারী, প্রক্রিয়াজাতকারী ও রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের নেতারা - ছবি : জাগরণ

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, সরকার উচ্চমূল্যের ফসল আবাদের প্রতি ‍গুরুত্ব দিচ্ছে। উচ্চমূল্যের কাজু বাদাম পুষ্টিকর এবং মজাদার খাদ্য। এটি উৎকৃষ্ট শিশুখাদ্যও বটে, যার চাহিদা সারা বিশ্বে দিনে দিনে বাড়ছে। এর একেকটি গাছ ৫০ কেজি করে গ্রিন হাউস গ্যাস (কার্বন ডাইঅক্সাইড) শোষণ করে, এ গাছটিকে পরিবেশের বন্ধুও বলা চলে। বাদাম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণে জনবলের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থান হবে।   

আজ বুধবার (১২ জুন) কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক সচিবালয়ে তার অফিসকক্ষে কাজুবাদাম উৎপাদনকারী, প্রক্রিয়াজাতকারী ও রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন। এতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি মো. হারুন।  

নেতারা বলেন, ২০১৪ সাল থেকে বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাশাপাশি থানচি, রোয়াংছড়ি ও সদর উপজেলা, খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটিতে কাজুবাদাম চাষ হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। নিজস্ব চারা থেকে উৎপাদিত গাছ হতে উৎপন্ন বাদামে তারা লাভবান হচ্ছে। ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা ৮০ হাজার মেট্রিক টন। ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫ কোটি গাছ রোপন করে ২ লাখ হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা হবে। উৎপাদন হবে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য ২৬ হাজার কোটি টাকা। আমাদের প্রসেসিং কারখানা থাকলে এবং প্রসেসিং করে রপ্তানি করা গেলে এই অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে। এর জন্য ভিয়েতনামের উচ্চফলনশীল জাতের চারা প্রয়োজন ও নিজস্ব প্রসেসিং কারখানা। 

কৃষিমন্ত্রী মনোযোগ সহকারে তাদের কথা শোনেন। তিনি বলেন, সরকার সবসময় কৃষকের লাভের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে। কাজুবাদাম আবাদ মোটামুটি সহজ। এটি চাষের ক্ষেত্র প্রসারিত করার পরামর্শ দেন তিনি। ভিয়েতনাম থেকে উচ্চ ফলনশীল জাতের চারা আমদানির ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে কাজু বাদাম চারা উৎপাদনে সরকার আর্থিক সহায়তা দেবে। আরো অধিক সংখ্যক খামারিকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সব উপযোগী পতিত যায়গায় এর চাষ করার তাগিদ দেন কৃষিমন্ত্রী। প্রক্রিয়াজাতসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানান। প্রয়োজনে খামারিদের বিদেশে অভিজ্ঞতা অর্জন ও প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাজু বাদামের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক এবং ক্রেতা। 

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ভিয়েতনাম ১৯৮৮ সালে কাজুবাদাম চাষ শুরু করে এবং ১৯৯৮ সালে বাণিজ্যিক চাষে গিয়ে আজ তারা বিশ্বে এক নম্বর হলে আমরা কেন পারব না। কৃষিপণ্যটি রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্যের তালিকায় উঠে এসেছে কৃষিপণ্যটি। যেসব দেশে কাজুবাদাম বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় সেসব দেশে গিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের তাগিদ দেন মন্ত্রী এবং দেশে এর প্রতিফলন চান।

নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শফিক উদ্দিন, কাজী শাহাদাত হোসেন, মো. মহিউদ্দিন, মো. কামাল উদ্দিন, সাইফুদ্দিন হাসান, শাহ সিরাজুর রহমান, রেজাউল করিম, নুরুল আফসার, মোস্তাফিজুর রহমান এবং মু. আব্দুস ছালাম।

টিএইচ/ এফসি