স্বজনদের আহাজারি

ফাহাদের স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হয়ে বিদেশে যাবেন

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০১৯, ০৫:২৭ পিএম ফাহাদের স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হয়ে বিদেশে যাবেন

প্রকৌশলী হয়ে বিদেশে যাবে আবরার ফাহাদ। বিদেশে গিয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি চাকরি করে বৃদ্ধ বাবার কষ্ট লাঘব করবে। তার সে স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেয়ার আগেই ফাহাদ চলে গেল না ফেরার দেশে। সহপাঠীরা তাকে বাঁচতে দিল না। 

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের সামনে নিহত ফাহাদের চাচা রবিউল ইসলাম ভাতিজার লাশের কফিন ধরে এসব বিলাপ করছিলেন।

তিনি আহাজারি করে বলেন, আমাদের বংশে কোন জামাত শিবির নেই। আমার ভাই ফাহাদের বাবা স্থানীয় জাতীয় নির্বাচনে নৌকার হয়ে পুলিং এজেন্ট ছিলেন। চাকরি থেকে অবসরের পর একটি বেসরকারি এনজিওতে কাজ করছেন। ২ ছেলের মধ্যে ফাহাদ বড় ছিল।

রবিউল বলেন, বুয়েটে ফাহাদকে একটি চক্র শিবির অপবাদ দিয়ে ছাত্রলীগ নামীয় ক্যাডাররা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি ফাহাদের ঘাতকদের গ্রেফতার, সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

ফাহাদের মামাতো ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, ফাহাদ সব সময় পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। কারো সঙ্গেই মিশতো না। মুসলমান হিসেবে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো। রাজনৈতিক কোনো দল, জামায়াত-শিবির, ইসলামিক উগ্রবাদী কোনো সংগঠনের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা ছিল না তার। ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড হয়নি। এখন চাওয়া একটাই, আমরা আশা করছি ফাহাদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার পাব।

ফাহাদের প্রতিবেশী ভাই মনির হোসেন বলেন, ফাহাদ ও ফাইয়াজ এই দুই ভাই ছিল। এত মেধাবী ও শান্ত ছেলে হয় না। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আমরা সে রকম কর্মকাণ্ড কখনো দেখিনি। গত পরশুদিনও আমি আবরারের সঙ্গে নামাজ পড়েছি। এই পাড়ায় তাদের অনেকে চেনেই না। তারা শুধু পড়ালেখা নিয়েই থাকে। হঠাৎ আজ সকালে শোনার পর আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি ছেলেটাকে কেউ মেরে ফেলতে পারে। আমরা আমাদের সন্তানকে লেখাপড়া করতে দিয়ে তারা লাশ হয়ে আসবে সেটা আশা করি না।

তিনি আরও বলেন,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আবেদন থাকবে, আমাদের সন্তানরা পড়তে গিয়ে আর যেন লাশ হয়ে না আসে সেই ব্যবস্থা তিনি করবেন।

আবরার ফাহাদ শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে। বাবা বরকত উল্লাহ ব্র্যাকের কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে অবসরে আছেন তিনি।

এইচএম/একেএস

আরও সংবাদ