সরকারের জিরো টলারেন্সের দাগে স্বাস্থ্য খাত

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২০, ১০:০৮ পিএম সরকারের জিরো টলারেন্সের দাগে স্বাস্থ্য খাত
বাঁ থেকে - স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডিজি আবুল কালাম আজাদ।

রোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম অব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম, চিকিৎসা সামগ্রি ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুর্নীতি এবং নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে ব্যাপক অনিয়ম সৃষ্টির ব্যাপারে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও এর সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন বিভাগের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ বেসরকারি পর্যায়ে করোনা চিকিৎসা প্রদানের নামে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদিত রিজেন্ট হাসপাতালের ভয়াবহ প্রতারণা ও জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ্যে আসে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুসারে করোনা চিকিৎসার পরিসর বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতলকে অনুমোদন প্রদানের ক্ষেত্রেও চরম অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন ব্যক্তিবর্গ। বিশেষ করে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খাতে দুর্নীতির সিন্ডিকেট পরিচালনাকারী উপর মহলের যোগাযোগ, পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অসাধু চক্রের সম্পৃক্ততার বিষয়টি।   

প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিশিষ্ট মহলের দাবি, একটি সফল ও রাষ্ট্রস্বার্থে নিবেদিত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিরুদ্ধে রীতিমত সাংঘর্ষিক অবস্থানে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য খাত। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা বলছেন, সরকার প্রধান যখন দুর্নীতির মূল উৎপাটনের লক্ষ্যে 'জিরো টলারেন্স' নীতির ঘোষণা দিয়েছেন তখন সরকারেরই একটি মন্ত্রণালয় ও এর সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো দুর্নীতি ইস্যুতে সেই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে রীতিমত ধৃষ্টতার পরিচয় দিচ্ছে। পাশাপাশি তারা এসকল দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সরকার প্রধানের 'জিরো টলারেন্স' নীতিতে অটল অবস্থান গ্রহণকে সাধুবাদ জানিয়ে এক্ষেত্রে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানে সকল মহলের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন।

গত ২৯ জুন জাতীয় সংসদের এক অধিবেশনে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা ও বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার প্রেক্ষিতে সমালোচনার মুখে পড়েন স্বাস্থ্য জাহিদ মালেক। এমনকি এদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০০০ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর ২ মাসের থাকা-খাওয়া খরচ বাবদ ২০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রসঙ্গে রীতিমত বিস্ময় প্রকাশ করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখার কথাও বলেন তিনি। অথচ অসঙ্গতি সৃষ্টির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ধারনাকে 'এবসুলুয়েটলি রং' বলে ধৃষ্টতার সঙ্গে প্রত্যাখান করেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার গুরু দায়িত্ব পালনে প্রধান ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের এ যাবতকালের সবচেয়ে সফল সরকার প্রধান- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সরকারের আমলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রয়েছে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী প্রাপ্তিযোগ।

পরবর্তীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় বিল প্রদান স্থগিত রেখে মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে ওঠা দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তৎপরতা শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। শুরু হয় স্বাস্থ্য খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রে 'করাপশন হান্টিং মিশন'। আর তাতেই সামনে আসতে থাকে একের পর এক দুর্নীতি আর প্রতারণার ভয়াবহ সব চিত্র।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদিত করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডেডিকেইটেড বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতাল ও এর মালিক মো. সাহেদের ভয়াবহ প্রতারণা ও জালিয়াতির তথ্য সামনে আসার পর দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরইমধ্যে বিভিন্ন সূত্রের তথ্য বলছে, স্বাস্থ্য বিভাগের আমলা সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় কোভিড-১৯ চিকিৎসার অনুমোদন গ্রহণ করে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার নামে প্রতারণার এই ক্ষেত্র গড়ে তুলেছে সাহেদ। স্বাস্থ্য বিভাগের নানা দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয় থেকে প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ গ্রহণের পরই বেরিয়ে আসতে থাকে এসকল দুর্নীতির তথ্য।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরাসরিই এখন এই দাবি তুলেছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারেই নিবন্ধন না থাকলেও সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতলকে করোনা চিকিৎসার অনুমোদন প্রদান করা হয়।

প্রাথমিক পর্যায়ে ধারনা করা হয়েছিলো যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক শ্রেনীর অযোগ্য, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অথর্ব ব্যক্তিদের কারণে স্বাস্থ্যখাতের এই বেহাল দশা তৈরি হয়েছে। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে ততই এই ধারণা বদ্ধমূল হচ্ছে যে, এটা অযোগ্যতা বা দায়িত্বহীনতা নয়, এটা একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ বা স্যাবোটাজ। সরকারকে বিতর্কিত করা, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা এবং দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এই ধারণা স্পষ্ট হয়েছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ব্যর্থতা বা ভুল নয়, বরং অপকর্মগুলো পরিকল্পিতভাবে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বস্ত একটি সূত্র বলছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিএনপি-জামাতের একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তাঁরা পরিকল্পিতভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন ব্যক্তিদের দিয়ে এই ধরণের অপকর্মগুলো করাচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে, সেই সন্দেহগুলো স্পষ্ট হচ্ছে এবং এখন এটা সরলরেখার মতো স্পষ্ট এবং দিবালোকের মতো সত্য যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ, হাওয়া ভবনের ঘনিষ্টজন এই সাহেদ।

শুরু থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিম্নমানের এন-৯৫ মাস্ক এবং পিপিই এনেছিল এবং এর ফলে আমাদের বহু চিকিৎসকের প্রাণহানি ঘটেছিল। বিশ্বে করোনা মোকাবেলায় যে দেশগুলোতে সবথেকে বেশি সংখ্যক চিকিৎসক মারা গেছেন সেই দেশগুলোর তালিকায় প্রথম স্থানে বাংলাদেশ। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন যে, চিকিৎসকরা পিপিই পরা জানতো না বলেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন মনে করেন যে, নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রীর জন্যেই শুরুর দিকে চিকিৎসকদের এই করুণ মৃত্যু ঘটেছে। এটা শুধু দুর্নীতি বা অবহেলা ছিলোনা, এটা ছিল একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিল যেন চিকিৎসকরা হাত-পা গুঁটিয়ে নেন, তাঁরা দায়িত্ব পালন না করেন। তাহলে সরকার একটি গভীর সঙ্কটে পড়বে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং সাহসি পদক্ষেপের কারণে শেষ পর্যন্ত এই চিকিৎসকরা কাজ করে যাচ্ছেন এবং বীরোচিত ভূমিকা পালন করছেন।

সরকারকে বিতর্কিত করা, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা এবং দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা সঙ্কটের প্রথম থেকেই অল্প পরীক্ষা করার মাধ্যমে একটা ধুম্রজাল সৃষ্টি করার চেষ্টা করছিল। প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিল যে, প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এই কাণ্ডটি করছেন। পরে বোঝা গেল যে, এটা একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। কম পরীক্ষা করে সারাদেশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা মোকাবেলা করা কঠিন হবে। এই জন্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কম পরীক্ষার কৌশল নিয়েছিল বলে মনে করেন অনেকে। আর এটার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রতিটি ধাপে। প্রথমে কম পরীক্ষা, দ্বিতীয়ত ঢাকার বাইরে পরীক্ষা না করা, তৃতীয়ত করোনা শনাক্তে যে পিসিআর মেশিন আনা হলো তা ২০০৯ সালের মডেলের এবং এর কিট এখন পাওয়া যাচ্ছেনা। এই সমস্ত পরিস্থিতি তৈরি করে জনগনকে সরকারের প্রতিপক্ষ বানানো ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেলেঙ্কারির প্রধান লক্ষ্য।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শুরু থেকেই একের পর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়েছেন। শুরুতে তিনি বলেছিলেন যে, বাংলাদেশে করোনার ব্যাপকতা হবেনা, এরপর বলেছেন বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ভাল এবং তার সাথে পাল্লা দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন যে, বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ইউরোপ-আমেরিকা থেকে ভালো। আর সর্বশেষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন যে, আগামী ২-৩ বছর আমাদের করোনার সঙ্গে বসবাস করতে হবে। যদিও তিনি এই বক্তব্যের জন্য পরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন, তবে ক্ষতি যা হওয়ার হয়েই গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও এর সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর এসক্ল অপকর্ম সুস্পষ্টভাবেই দুর্নীতির ইস্যুতে সরকারের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করার পাশাপাশি রীতিমত এর বিরুদ্ধাবস্থান জানা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এবার সরব হতে শুরু করেছেন দলের বহু কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও।

গত বছর দুর্নীতির মূল উৎপাটনের ঘোষণা দিয়ে নিজ দলের মধ্য থেকেই সেটা শুরু করবেন বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেই কথা রেখেছেন। দুর্নীতির দায়ে সে সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপশি অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যে যুবলীগের কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে আসলে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়।

"একটা সরকার ক্ষমতায় থাকলে নানাভাবে সেখানে অনুপ্রবেশ ঘটে। কিন্তু প্রশ্নটা হলো, এটা সরকার পালাপোষা করছে নাকি এর মূল উৎপাটন করতে চাচ্ছে-সেটাই দেখার বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।"

এছাড়া করোনাকালীন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ত্রাণ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বেশ কয়েকজন দলীয় জনপ্রতিনিধিকে ক্ষমতাচ্যুতির মাধ্যমে অপসারণের নজিরবিহীন দৃষ্টান্তও স্থাপন করে সরকার। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক সাথে এতজন জনপ্রতিনিধি অপসারণের ঘটনা এটাই প্রথম। যেখানে দলীয় পরিচয়ের বিপরীতে ন্যনুতম ছাড় দেয়া হয়নি কাউকে। আর এবার স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির বিষয়েও শুরু হলো সরকার প্রধানের 'জিরো টলারেন্স' নীতির প্রয়োগ।

সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে নিজের অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, "এই ধরণের ঘটনায় যে কেউ বিব্রত হতে পারে এবং হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে কথাটা সংসদে বরেছেন যে,এর প্রত্যেকটা ঘটনাই কিন্তু আওয়ামী লীগের সরকার এবং প্রশাসনের মাধ্যমে আইনগতভাবে উদঘাটিত হচ্ছে, অন্য কেউ এসে খবর দিয়ে যায় নাই।"

তিনি আরও বলেছেন, "একটা সরকার ক্ষমতায় থাকলে নানাভাবে সেখানে অনুপ্রবেশ ঘটে। কিন্তু প্রশ্নটা হলো, এটা সরকার পালাপোষা করছে নাকি এর মূল উৎপাটন করতে চাচ্ছে-সেটাই দেখার বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।"

এদিকে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। বলাবাহুল্য যে, টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার গুরু দায়িত্ব পালনে প্রধান ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের এ যাবতকালের সবচেয়ে সফল সরকার প্রধান- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সরকারের আমালে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অনন্য উচ্চতা অর্জনের পাশাপাশি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রয়েছে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী প্রাপ্তিযোগ। যা বিগত কোনোও সরকারের আমলে অর্জিত হয়নি। স্বল্পতম সময়ে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নতি লাভ এবং সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিন এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের রেকর্ডও রয়েছে সাফল্যের এই পরিসংখ্যানের মাঝে। কিন্তু করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও তৎসংলগ্ন বিভিন্ন খাতে যে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার নজির প্রকাশিত হয়েছে, তা অনেকাংশেই সরকারের এই অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে।

আরও সংবাদ