মামুনুলের জন্য সাংবাদিকদের গালাগাল করলেন এএসআই

জাগরণ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২১, ০৫:০২ পিএম মামুনুলের জন্য সাংবাদিকদের গালাগাল করলেন এএসআই

হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুক লাইভে এসে সাংবাদিকদের গালাগালি করেছেন গোলাম রাব্বানী নামে পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)। তিনি কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন।

রোববার (৪ এপ্রিল) তাকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে এএসআই গোলাম রাব্বানী বলেন, ‍“ওনার (মামুনুল হক) স্ত্রীকে নিয়ে উনি গেছেন, আর আপনি (সাংবাদিক) ভিডিও-টিডিও করে ওনাকে ব্যভিচারী বানাচ্ছেন, এগুলো ভণ্ডামি বাদ দেন। বাংলাদেশের যে মিডিয়াগুলো আছেন, আপনাদের অধিকাংশই বদমাশ। যারা ওখানে গেছেন তাদের অধিকাংশই বদমাশ। মিডিয়া সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা আছে। আপনারা বিভিন্ন সময় অপকর্ম করেন আর বিভিন্ন জায়গা থেকে মাল (টাকা) খান। যেখানে মাল পান না সেখানে প্রকাশ করেন, আর যেখানে মাল পান সেটা চুপ করে রেখে দেন।”

‘সাংবাদিকদের বেতন নাই’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‍“আপনাদের (সাংবাদিক) তো বেতন-টেতন নাই। দেশের মধ্যে এগুলো করে খান। বদমাইশেরা কোথাকার! ভণ্ডরা কর্মসংস্থান নাই, কিছু নাই, সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়ায়, আর এখন আলেমদের পিছনে লাগছো? দেশে আরো যে কত জন কত কিছু করতেছে এগুলো বলো না কেন? কারণ কী? ভণ্ডরা, একজন আলেমকে পঁচানোর জন্য চেষ্টা করতেছো?”

গোলাম রব্বানী আরো বলেন, “তিনি (মামুনুল হক) যদি তার স্ত্রী ব্যতীত অন্য কাউকে নিয়ে যেত, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হতো। আপনারা (সাংবাদিকরা) পুলিশকে খবর দিতেন। তিনি একজন আলেম মানুষ। তাকে মিডিয়ার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণটা কী?”

‘পুলিশ প্রধান, সেনাপ্রধানকেও পাপী’ বলে মন্তব্য করে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‍“প্রত্যেক আদম সন্তান পাপী। এই সেনাপ্রধান, আমাদের পুলিশ প্রধান, কেউ বলতে পারবে না আমি পাপ ছাড়া আছি। পাপ ছাড়া পৃথিবীতে কোনো মানুষ নেই।”

বাংলাদেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এই এএসআই আরো বলেন, “মামুনুল হক এত বড় একটা দায়িত্বে আছেন, ওনার মতো একজন আলেম যদি এই কাজ করেন, তাহলে বাংলাদেশের আইনে যাই থাকুক না কেন, আমি মুসলমান হিসেবে ওনাকে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলতাম। বাংলাদেশের রাষ্ট্রে ধর্ষণ-ব্যাভিচারের শাস্তি কী থাকলো সেটা বড় বিষয় নয়।”

পাথর মেরে হত্যা করার কথাটি দৃঢ়কণ্ঠে তিনি একাধিক উচ্চারণ করে বলেন, “মামুনুল হক যদি এ বিষয়ে অপরাধী হয়, তাকে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলা হবে। তবে ওনার মতো একজন আলেম এ ধরনের কাজ করবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না।”

“মিডিয়ারা তাকে (মামুনুল হক) কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। ছবি প্রচার করে মানুষকে কলঙ্কিত করা যায় না।” মন্তব্য করেন গোলাম রাব্বানী।

এদিকে ফেসবুকে এমন বক্তব্য দেওয়ার পর রোববার এএসআই গোলাম রাব্বানীকে কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। বর্তমানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মুহিদ উদ্দিন জানান, এএসআই গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে এরই মধ্যে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যাহার করে তাকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। পেশার বাইরে গিয়ে কেন তিনি অপেশাদার আচরণ করেছেন, এটি জানতে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) ও ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।