টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা, বিকল্প উৎসের চিন্তা

জাগরণ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২১, ০২:১৪ পিএম টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা, বিকল্প উৎসের চিন্তা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন না হওয়ায় আগামী তিন মাসের জন্য টিকা রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। ফলে দেশটি থেকে চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই অনিশ্চয়তায় পড়েছে বাংলাদেশ। এমতাবস্থায় বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো দেশ থেকে টিকা আমদানির উৎস খুঁজছে সরকার।

ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা ক্রয় করে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা। যার ৭০ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে। কিন্তু প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকার চালান আসার কথা থাকলেও গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে নতুন কোনো চালান আসেনি।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, টিকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে দেশটি থেকে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে সময়মতো টিকা পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

মূলত ভারতে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মার্চ মাসের শেষে টিকা রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার। সর্বশেষ গত বুধবার (২১ এপ্রিল) সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনেওয়ালা আগামী তিন মাস অর্থাৎ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ টিকা রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেন। কাঁচামাল সংকটের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টিকা তৈরি করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন দেশে গড়ে দেড় থেকে দুই লাখ টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেই তুলনায় বুধবার পর্যন্ত তাদের কাছে টিকার মজুত ছিল ২৭ লাখ ২২ হাজারের কিছু বেশি। নতুন চালান না এলে কয়েক দিনের মধ্যেই ফুরিয়ে যাবে টিকা। তখন প্রথম ডোজ না পাওয়া অনেকেই দিতে পারবেন না দ্বিতীয় ডোজ।

খোঁজা হচ্ছে নতুন উৎস

ভারতের টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্য দেশ থেকে টিকা আমদানি বা যৌথ উৎপাদনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বুধবার সেই কমিটির বৈঠকে বিশ্বের পাঁচটি টিকা নিয়ে আলোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ ও চীনের সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশনের টিকার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গণমাধ্যমকে জানান, চুক্তির টিকা পেতে ভারতের সঙ্গে তারা যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি রাশিয়া ও চীন থেকে বাণিজ্যিক বা যৌথ উৎপাদনের মাধ্যমে টিকা সংগ্রহরে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দেশগুলোতে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস সেখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।