জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সাদেক হোসেন খোকা ও শাজাহান সিরাজ

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০১৯, ০৯:০৬ এএম জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সাদেক হোসেন খোকা ও শাজাহান সিরাজ
সাদেক হোসেন খোকা ও শাজাহান সিরাজ (ডানে)

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা এবং বিএনপির সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজ। দুজনের অবস্থাই সঙ্কটাপন্ন। 

চিকিৎসকদের পরামর্শে সাদেক হোসেন খোকা নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালের আইসিইউতে এবং শাজাহান সিরাজ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে গুলশানের বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে চিকিৎসাধীন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার অবস্থা বেশ সঙ্কটাপন্ন। নিউ ইর্য়কের ম্যানহাটনের স্পোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে তাকে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।তার ছেলে বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বাবার জন্য দোয়া কামনা করে বলেছেন, বাবার শারীরিক অবস্থা খুব ভালো নয়।

চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে সপরিবারে নিউ ইয়র্ক যান সাদেক হোসেন খোকা। তারপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্সে একটি বাসায় দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন বিএনপির এই নেতা।

খোকার স্বজনরা জানায়, লাগাতার ওষুধ সেবনের ফলে তার মুখে ঘা হয়ে গেছে। তিনি খাবার খেতে পারছিলেন না। সেজন্য ওই হাসপাতালে ভর্তির পর গত ২৭ অক্টোবর তার ফুসফুসে ছোট একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তাকে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ওই হাসপাতালে।

২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন খোকা। ২৯ নভেম্বর ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শাসনামলে মেয়র ছিলেন তিনি।

শাহাজান সিরাজের স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ দৈনিক জাগরণকে বলেন, কথা বলতে পারছেনর না শাজাহান সিরাজ। সারাক্ষণ ঘুমিয়ে থাকেন। তিনি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। ধারণা করা হচ্ছে সেটা ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে। রাবেয়া সিরাজ জানান, মাথায় জমে থাকা পানির জন্য কোনও নড়াচড়া করা ঠিক হবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। সে কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় মুভমেন্ট করালে তার শরীর আরও খারাপ হতে পারে।

শাহজাহান সিরাজের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। ষাটের দশকে ছাত্রলীগের মাধ্যমে তার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। টাঙ্গাইল সাদত কলেজের ছাত্র সংসদে একবার সাধারণ সম্পাদক ও দুবার ভিপি ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।’৭১-এর মার্চের উত্তাল দিনে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা ছিলেন। সেই সময়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চার নেতা বঙ্গবন্ধুর চার খলিফা রূপে পরিচিতি পান। ১ মার্চ সংসদ স্থগিত হওয়ার পর ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তিনি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব বাহিনীর অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে তিনি মুজিব বাহিনীর পক্ষে লিয়াজোঁর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী জাসদ গঠন করেন শাজাহান সিরাজ। বাম ঘরানা থেকে রাজনীতির জটিল অঙ্গনে উল্টোপথে হেঁটে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ছিলেন শাজাহান সিরাজ।

সর্বশেষ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। 

এইচএম/এসএমএম