আবেদন হয়নি প্যারলের, তাই অবকাশ নেই বিবেচনারও : কাদের

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০, ০৪:৩৫ পিএম আবেদন হয়নি প্যারলের, তাই অবকাশ নেই বিবেচনারও : কাদের
ওবায়দুল কাদের - ফাইল ছবি

দুর্নীতির মামলায় কারান্তরীণ খালেদা জিয়ার প্যারলের জন্য আবেদন না করায় তার মুক্তির ক্ষেত্রে যুক্তিযুক্ত কারণগুলো বিবেচনার অবকাশ নেই। এমন কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে খুলনা বিভাগীয় আওয়ামী লীগের যৌথসভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তির চেয়ে তার দল ও পরিবার রাজনৈতিক ফায়দা তোলার দিকে বেশি নজর দিচ্ছে বলেও মনে করছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।  

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব (বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) একবার বলেন বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ, তিনি মরণের পাড়ে। আবার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বেগম জিয়াকে মানবিক কারণে মুক্তি দেয়া। … তার প্যারল... জাতীয় বিষয়ও আছে। প্যারল দিতে গেলে একজন বন্দিকে… বন্দির চেয়েও বড় কথা তিনি কনভিক্টেট প্রিজনার (কারাবন্দি)। কনভিক্টেট প্রিজনারকেও প্যারলে মুক্তি দেয়ার নিয়ম আছে।’

তিনি বলেন, তারা প্যারলের আবেদনই করেনি। কাজেই সেই নিয়মটি আছে কি না, যুক্তিযুক্ত কোনো কারণ আছে কি না তাকে মুক্তি দেয়ার, সেটা বিবেচনার কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু তারা কোনো আবেদন করেনি। প্যারলে মুক্তি দেয়ার সেসব কারণ প্রদর্শন করে এ পর্যন্ত তারা কোনো আবেদন করেনি।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিএনপির ‘নাটক করছে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করে তারা ক্ষান্ত হয়নি। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তারা ক্ষান্ত হয়নি। নানামুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আজকে বেগম জিয়াকে কেন্দ্র করে তারা নতুন নতুন ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করছে। আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে তারা সরকার হঠানোর জন্য সরকারের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র করছে। বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা আজকে নতুন নতুন নাটক করছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা খালেদা জিয়াকে কেন্দ্র করে পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে যা করছে, তাদের মহাসচিব যা করছে- এটা আসলে তারা বেগম জিয়াকে মুক্তি দেয়ার চেয়েও তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যতটা না ব্যাকুল তার চেয়ে ব্যাকুল রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে, রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য। তারা শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিএনপি নাটক করছে, রাজনীতি করে যাচ্ছে।’

বয়স বিবেচনায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যেমন থাকার কথা তেমনই আছে- উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব ঝানু রাজনীতিক হতে পারেন, কিন্তু তিনি কি ঝানু চিকিৎসক যে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা কী তিনি সেই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেন? চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম জিয়ার অবস্থা বার্ধক্যের কারণে যেই অবস্থানে থাকার কথা সেই অবস্থানে আছেন। তরুণ-তরুণীর মতো শারীরিক অবস্থা তার নেই। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা যা থাকার তা-ই আছে। কোনো প্রকার অবনতি হচ্ছে না। শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসা তাকে দিচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। বেগম জিয়ার মামলা দুর্নীতির মামলা। সরকার কীভাবে মুক্তি দেবে? যদি রাজনৈতিক মামলা হত তাহলে রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তির প্রশ্ন ছিল। কিন্তু যেহেতু এই মামলা রাজনৈতিক নয়। এই মামলা দুর্নীতির মামলা আর এই মামলা এই সরকারও রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে হেয় করার জন্য রুজু করেছে এমন নয়। মামলা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই মামলা তিনি হাজিরা না দিতে দিতে, গড়াতে গড়াতে তাদের নানা কারসাজি এই মামলার এই অবস্থায় এসেছে।’

এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক জেলার শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এএইচএস/ এফসি