অবশেষে চাঁদের মাটিতেই খোঁজ মিলল বিক্রমের!

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৯, ১১:৩৬ এএম অবশেষে চাঁদের মাটিতেই খোঁজ মিলল বিক্রমের!
পালক পতন বা সফ্‌ট ল্যান্ডিং হয়নি বিক্রমের -ছবি : আনন্দবাজার থেকে নেয়া

চাঁদের মাটি স্পর্শ করার ২ দশমিক ১ কিলোমিটার আগে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রমের’ সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) মধ্য রাতে যে আলো নিভে গিয়েছিল, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) নিখোঁজ বিক্রমের খোঁজ মেলার সঙ্গে সঙ্গে আবারও চন্দ্র অভিযান নিয়ে বুক বেঁধেছে ভারত। 

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে বলা হয়, ‘- না, চাঁদের পিঠে নিখোঁজ হয় নি ল্যান্ডার বিক্রম! চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ঠিক কোন জায়গায় সে নেমেছে, কক্ষপথে থাকা অরবিটার তা জানতে পেরেছে। এমনকি ছবিও তুলে ফেলেছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা ছোঁয়ানো ল্যান্ডার বিক্রমের। তবে যে ছবিগুলো পাঠিয়েছে সবগুলোই থার্মাল ইমেজ। সেই সব ছবিগুলোই অরবিটার বেঙ্গালুরুতে ইসরোর গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে। 

প্রকাশিত খবরে আরও বলা হয়, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) এই সু-সংবাদ প্রকাশ করেন ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিক্রমের কাছ থেকে কোনও রেডিও সিগন্যাল অরবিটারের কাছে পৌঁছায় নি। কিন্তু সে কোথায় নেমেছে তার খবর যখন পাওয়া গেছে তখন শিগগিরই আশা করা যায় বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করাটাও সম্ভব হবে।

শুক্রবার রাত ১ টা ৫৫ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করার কথা ছিল এই মহাকাশযানের। ঘটনা বাস্তবায়িত হলে, এই প্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি পৌঁছনোর ঐতিহাসিক কৃতিত্ব অর্জন করত ভারত। কিন্তু চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের ঠিক আগ মুহূর্তে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডর বিক্রমের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ইসরোর। ১৩৩ কোটি মানুষের স্বপ্ন ছিল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ‘বিক্রমের’ অবতরণের পুরো চিত্র দেখার এবং ঐতিহাসিক সেই মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করতে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র ইসরোর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু চাঁদের মাটিতে অবতরণের ঠিক আগ মহূর্তে বিক্রমের সাথে ইসরোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে গোটা ভারতবর্ষের সব স্বপ্নই আলো-অন্ধকারে নিভে যায়।  

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানায়, চাঁদ থেকে পানি, খনিজ ও পাথর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ১৫ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল এই ‘বিক্রম’ নামে যানটিকে। চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই এর ল্যান্ডর থেকে বেরিয়ে আসার কথা ছিল ভীষণ ছোট একটি রোভার ‘প্রজ্ঞান’। যার ওজন মাত্র ২০ কিলোগ্রাম। আর ‘চন্দ্রযান-২’ এর সার্বিক ওজন ৩ হাজার ৮৫০ কিলোগ্রাম। ল্যান্ডরটি নেমে আসার সময় ‘চন্দ্রযান-২’ এর অরবিটারটি চাঁদের পিঠ (লুনার সারফেস) থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার ওপরে ছিল।

এর আগে ভারতের প্রথম চন্দ্রাভিযান হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন চাঁদের কক্ষপথে গিয়েছিল ‘চন্দ্রযান-১’। চাঁদে পানির অন্যতম উপাদান হাইড্রক্সিল আয়নের খোঁজ দিয়েছিল যানটি।  

এমএইচএস/এসএমএম